| সকাল ৯:৫০ - শনিবার - ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ - ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - ১০ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

অবাধ, সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে: সিইসি

ঢাকা : প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ বলেছেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ জন্য তিনি নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে ধন্যবাদও জানিয়েছেন।

সিইসির দাবি, বেশির ভাগ কেন্দ্রে বড় ধরনের অপ্রীতিকর কোনো ঘটনা ঘটেনি। ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা, এজেন্ট ও সাধারণ ভোটারদের কেউ কোনো অভিযোগ জানায়নি। দেশের তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটগ্রহণ নিয়ে যেসব অভিযোগ এসেছে সেগুলো তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ।

নির্বাচন পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে সিইসি এসব কথা বলেন। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি দাবি করেন, ‘প্রতিটি কেন্দ্রে ব্যাপক ভোটারদের উপস্থিতি ছিল। ভোটাররা স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিয়েছেন।’

সংবাদ সম্মেলনে সিইসি বলেন, ‘আমি কয়েকটি কেন্দ্র পরিদর্শন করেছি। এ সময় অনেকের সঙ্গে কথা বলেছি। সাধারণ ভোটারদের কাছে জানতে চেয়েছি ভোট দিতে আসতে কোনো সমস্যা হয়েছে কি না। কেউ কোনো সমস্যার কথা বলেনি।’

সিইসি বলেন, বিভিন্ন দেশের কুটনীতিকেরাও নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেছেন। তাঁরাও বলেছেন নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। তিনি জানান, কয়েকটি কেন্দ্রে অরাজকতার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়ে ভোটগ্রহণ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। নির্বাচনী কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়া এবং নির্বাচন পরবর্তী শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আরও একদিন দায়িত্বে থাকার নির্দেশ দিয়েছে ইসি।

নির্বাচনে বড় একটি দলের ভোট বর্জন করা সম্পর্কে জানতে চাইলে সিইসি বলেন, ‘এ নির্বাচন তো কোনো দলভিত্তিক নির্বাচন নয়। প্রার্থীভিত্তিক নির্বাচন। আমাদের কাছে এখনো পর্যন্ত বর্জনের অভিযোগ কেউ করেননি। এটা তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। তা ছাড়া যেসব কেন্দ্রে অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটেছে, সেখানে ভোট বন্ধ করে দিয়েছি। প্রয়োজনে সেখানে আবার ভোট হবে। এ সম্পর্কে একটি আইন আছে তা আপনারা জানেন।’

বিভিন্ন কেন্দ্র দখলের অভিযোগ সম্পর্কে প্রশ্ন করলে সিইসি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমরা বেশকিছু অভিযোগ পেয়েছি। গত দুদিন ধরে কন্টিনেওয়াস অভিযোগ আসেছে। এসব অভিযোগ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। গোলোযোগের কারণে তিনটি ভোটকেন্দ্রের ভোটগ্রহণ বন্ধ করা হয়েছে। আরো কিছু ভোটকেন্দ্রে সাময়িক স্থগিত করা হয়েছিলো। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হস্তক্ষেপের কারণে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে এনে ভোটগ্রহণ আবার শুরু করা হয়।’

নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করা সাংবাদিকদের সঙ্গে পুলিশের দুর্ব্যবহার সম্পর্কে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘আমরা সকালে আপনাদের কাছ থেকে এ বিষয়ে রিপোর্ট পেয়েছি। তখনই আমরা সব কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছি। তাদেরকে পর্যবেক্ষণ নীতিমালা পড়ে শুনিয়েছি। নীতিমালায় বলা আছে গোপন কক্ষ ছাড়া আপনারা এবং পর্যবেক্ষকরা সবখানে যেতে পারবেন। কিন্তু একসাথে অনেক লোক গেলে অসুবিধা হয়। একদল চলে গেলে আরেকদল যাবেন এমনটাই আপনাদের করার কথা। আপনারা আমাকে কেন্দ্রের নাম উল্লেখ করে দেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সেইসব সদস্যের নাম উল্লেখ করে দেন। আমরা অ্যাকশন নেবো। হোয়াই নট। আপনাকে যেখানে যেতে আমরা অধিকার দিয়েছি, সেখানে যাওয়াটা আপনার অধিকার। যাবেন পর্যবেক্ষণ করবেন, বেরিয়ে আসবেন। এরকমই তো হওয়ার কথা।’

আজ সেনাবাহিনী মোতায়েনের মতো পরিস্থিতি হয়েছিলো কি না? তা জানতে চাইলে কাজী রকিব বলেন, ‘ভোটকেন্দ্র বন্ধ করা সেনা তলবের মধ্যে পার্থক্য আছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণের বাইরে পরিস্থিতি চলে গেলে তবেই সেনা মোতায়েনের কথা ছিল। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীই যদি শান্তি ফিরিয়ে আনতে পারে তাহলে  তো আর সেনা মোতায়েনের দরকার হয় না।’

সেনা সহযোগীতা ছাড়াই আজ যে নির্বাচন হলো, তা নিয়ে কমিশন খুশি কি না তা জানতে চাইলে সিইসি বলেন, ‘নির্বাচন এখনও শেষ হয়নি। অর্ধেক কাজ হয়েছে। এখনও ভোট গণনা চলছে। ভোটারটা নিরাপদে ঘরে ফিরে গেছেন। এটা আমাদের জন্য বড় অর্জন।’

যেহেতু এখনও গণনা চলছে তাই নির্বাচনে কত শতাংশ ভোট পড়েছে এ সম্পর্কে আগামীকাল বলা যাবে বলেও জানান সিইসি।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তড়িৎ হস্তক্ষেপের কারণে নির্বাচনে বড় ধরনের কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি বলে সাংবাদিকদের জানান প্রধান নির্বাচন কমিশনার। তিনি বলেন, ‘আমার সহকর্মীরা বেশকিছু ভোটকেন্দ্র পর্যবেক্ষণ করেছেন। আমিও দুটি ভোটকেন্দ্র পর্যবেক্ষণ করেছি। সেখানে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। ভোটারদের ভোট দিতে কোথাও কোনো বাধা দেওয়া হয়নি। বিদেশী বন্ধুরাও ভোট পর্যবেক্ষণ করে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে বলে জানিয়েছেন।’

এসময় অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য এবং সাংবাদিক বন্ধুদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানান সিইসি।

সর্বশেষ আপডেটঃ ১১:০৭ অপরাহ্ণ | এপ্রিল ২৮, ২০১৫