| সকাল ৬:১১ - সোমবার - ২২শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ - ৯ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - ১২ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

তাড়াইলে বোরোর বাম্পার ফলন হলেও হতাশ কৃষক

আমিনুল ইসলাম বাবুল, তাড়াইল (কিশোরগঞ্জ):
কিশোরগঞ্জের তাড়াইলে চলতি মৌসুমে ইরি-বোরোর বাম্পার ফলন হলেও কৃষকের মুখে হাসি নেই। উপজেলার সর্বত্র বোরো ধান কাটার উৎসব চলছে। হাওরাঞ্চলের গেটওয়ে হিসেবে পরিচিত এ উপজেলার কৃষাান-কৃষাণীরা এখন বোরো ধান কাটা ও মারাইয়ের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। কিন্ত নতুন ধানের বাজার মূল্য কম থাকায় কৃষকের মাঝে হতাশা দেখা দিয়েছে। এ উপজেলার কৃলকদের প্রধান ফসল হচ্ছে বোরো ধান। এ কারণে অধিকাংশ কৃষকেরা ধার দেনা ও চড়াসুদে ঋণ নিয়ে বোরো আবাদ করেছিলেন। কিন’, বাজারে ধান বিক্রি করে কৃষকরা উৎপাদন খরচও তুলতে পারছেনা। ফলে ভালো ফলন হলেও বাজারদর কম থাকায় কৃষকরা লোকসানের মুখে পড়েছেন। সরকারিভাবে এখনও ধানের বাজার মূল্য নির্ধারণ ও বোরো সংগ্রহ অভিযান শুরম্ন হয়নি। উপজেলা খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দিন জানান, আগামী মাস থেকে বোরো সংগ্রহ অভিযান শুরম্ন হবে। তবে, সরকারিভাবে ধানের বাজার মূল্য নির্ধারণ ও বোরো সংগ্রহ অভিযান শুরম্ন হলে কৃষক লাভমান হবে এমন মনত্মব্য করেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা।
উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বোরো মৌসুমে উপজেলায় ১২ হাজার হেক্টর বোরো ধানের আবাদ করা হয়। মৌসুমের শুরুতে বীজ ক্রয় থেকে শুরম্ন করে বীজতলা তৈরী, চারা রোপন, সার ও কীটনাশক প্রয়োগ, সেচ খরচ, শ্রমিকের মজুরীসহ প্রতিমণ ধানের উৎপাদন খরচ পড়েছে ৬৫০ থেকে ৬৮০ টাকা। উপজেলার বেশীরভাগ কৃষক অসচ্ছল ও ভূমিহীন। অনেকেই অন্যের জমি বর্গা নিয়ে বোরো আবাদ করেছিলেন। এসব খরচ যোগাতে কৃষকরা বিভিন্ন ব্যাংক, বেসরকারি সংস্থা ও চড়াসুদে দাদন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে ছিলেন। অথচ, বাজারে এখন প্রতিমণ ধান বিক্রি হচ্ছে ৪৮০ থেকে ৫০০ টাকায়। এতে কৃষকদের লাভ তো দুরের কথা উল্টো লোকসান গুণতে হচ্ছে। ফলে ঋণের টাকা পরিশোধ ও সারা বছর সংসার চালানো নিয়ে কৃষকরা দুচিনত্মায় পড়েছেন।
উপজেলার সাচাইল গ্রামের কৃষক আলতু মিয়া (৪৮) বলেন, ধার দেনা করে সাড়ে আট একর জমিতে ইরি-বোরো ধান চাষ করেছি। বাজারে দাম কম থাকায় লাভ হওয়া-তো দুরের কথা উৎপাদন খরচ উঠবে না। অনেক টাকা লোকসান হবে। এখন কীভাবে ঋণ শোধ করবো আর সারা বছর সংসার চালাব আলস্না-ই জানেন। একই ধরনের কথা বলেছেন তেউরিয়া গ্রামের শফিউলস্নাহ, দামিহা গ্রামের আবদুল হালিম, মৌগাঁও গ্রামের সোনু মিয়াসহ আরও অনেক কৃষক।
তাড়াইল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দুলাল হোসেন বলেন, বাজারে ধানের দাম কম থাকায় কৃষকেরা বেকায়দায় পড়েছেন। এখনও সরকার ধানের বাজার মূল্য নির্ধারণ করেননি। সরকারিভাবে বাজারমূল্য ঘোষণা করা হলে দাম বাড়বে। তখন কৃষকেরা লাভমান হবেন।

সর্বশেষ আপডেটঃ ৮:১৩ অপরাহ্ণ | এপ্রিল ২৮, ২০১৫