মমেক হাসপাতাল এর ৪তলা ভবন পরিত্যাক্ত, রোগীদের স্থানান্তর
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (মমেকহা) পুরাতন ৪ তলা ভবনের বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখায় আতঙ্কে বের হয়ে পড়েছে রোগী ও স্বজনরা। ভবনের ছাদ ও দেয়াল থেকে ইট-সুড়কি ও প্লাস্টার খসে পড়ছে। ভবনের ৪টি ওয়ার্ডের পাঁচ শতাধিক রোগীকে বিভিন্ন ওয়ার্ডের বারান্দায় স্থানান্তর করা হয়েছে। স্থবির হয়ে পড়েছে তাদের চিকিৎসা ব্যবস্থাও। কর্তৃপক্ষ ভবনটিকে পরিত্যাক্ত ঘোষণা করেছে।
রোগীদের স্বজনরা জানান, শুক্রবার রাতে হঠাৎই ভবনটির বিভিন্ন তলার দেয়াল থেকে প্লাস্টার খসে পড়ে। এরপর পরই দেয়ালগুলোতে ছোট-বড় ফাটলও দেখতে পান তারা। পরে সার্জারি, গাইনি, মেডিসিনসহ বিভিন্ন বিভাগের ওয়ার্ড এবং কেবিন থেকে আতঙ্কিত রোগী ও তার স্বজনেরা বেরিয়ে আসেন। এসময় অন্যান্য ভবনের সামনের বারান্দা ও করিডরে আশ্রয় নেন তারা। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মকর্তারা ভবনটি পরিদর্শন করেছেন। ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক মো. শহিদুর রহমান বলেন, ‘ভবনের রডগুলো বের হয়ে আছে, সেগুলো মরিচা পড়া এবং খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এই ভবনটি ব্যবহারের অনুপযোগী বলে মনে হয়।’
রবিবার দুপুরে মমেকহা’য় উদ্ভুত পরিস্থিতিতে এক জরুরী সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় পরিচালকের অফিস সংলগ্ন ১৯৬০ সালে নির্মিত ভবনটি জরাজীর্ণ ও প্লাস্টার খরে পড়ায় ঝুকিপূর্ণ ভবনটি পরিত্যাক্ত ঘোষণা করা হয়। ৪, ৭, ১৪ ও ১৭ নং ওয়ার্ডসহ ৪টি ওয়ার্ডের পাঁচ শতাধিক রোগীকে বিভিন্ন ওয়ার্ডের বারান্দায় স্থানান্তর করা হয়েছে। জরুরী ভিত্তিতে এই ভবনের শক্তিশালী রূপে মেরামত করার জন্য হাসপাতালের পরিচালক স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি প্রেরণ করেছেন। সভায় উপস্থিত ছিলেন মমেকহা পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডাঃ নাসির উদ্দিন আহমেদ, বিএমএ সাধারণ সম্পাদক ডাঃ মতিউর রহমান ভূইয়া, গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ কামরুজ্জামানসহ সিনিয়র চিকিৎসকগণ।
বারান্দায় ঠাঁই নেওয়া রোগীরা জানান, হাসপাতালের বারান্দায় কোনোরকমে ঠাঁই নিয়েছি। শীতে প্রচন্ড কষ্ট হচ্ছে রোগীদের।
রোগীর স্বজনরা অভিযোগ করে বলেন, হাসপাতালের নতুন বহুতল ভবনটির কয়েকটি ওয়ার্ড ফাঁকা থাকার পরও আমাদের বারান্দায় আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। এটি কর্তৃপরে অবহেলা আর খামখেয়ালি ছাড়া কিছুই নয়।
হাসপাতালের পুরাতন ভবনের ফাটল বিষয়টি স্বীকার করে হাসপাতালের সহকারি পরিচালক ডা. লীনারায়ণ মজুমদার জানান, হাসপাতালের ৪, ৭, ১৪ ও ১৭ নং ওয়ার্ডে হঠাৎ করে ফাটল দেখা দেয়। তাই অন্য ওয়ার্ডে সিট খালি না থাকায় হাসপাতালের পুরনো ভবনের ওই ৪টি ওয়ার্ড থেকে রোগীদের বারান্দায় রাখা হয়েছে। তিনি জানান, গণপূর্ত বিভাগকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। তারা ভবনের ফাটল পরিদর্শন করেছেন। এ ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ের সাথেও যোগাযোগ করা হয়েছে।
ময়মনসিংহ গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ কামরুজ্জামান জানান, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (মমেকহা) পুরাতন ২টি ৪তলা ভবন সংস্কার ও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ‘রেক্টোপিটিং এন্ড রিমডেলিং’ প্রকল্পের আওতায় কোটি টাকা ব্যয়ে সংস্কার কাজ চলছে। এই ভবনটি সংস্কারের বাইরে ছিল। জরাজীর্ণ এই ভবনটির মেরামতের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পত্র দেয়া হয়েছে।