| বিকাল ৫:৩১ - মঙ্গলবার - ৩০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ - ১৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - ২০শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

নিউইয়র্কে আবারও কৃষ্ণাঙ্গের গলায় চাপ, পুলিশ সাসপেন্ড

লোক লোকান্তরঃ  যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে আবারও নিরস্ত্র এক কৃষ্ণাঙ্গ যুবকের ঘাড় চেপে ধরল পুলিশ। বর্ণবাদবিরোধী বিক্ষোভের মধ্যেই এবার ঘৃণ্য এই কৌশল প্রয়োগ করা হয়েছে নিউইয়র্কের কুইন্সে।

 

ঘাড় চেপে ধরে যুবককে আটক করে চার শ্বেতাঙ্গ পুলিশ। জর্জ ফ্লয়েডের মতো এ ঘটনার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। এতে নেতৃত্ব দেয়া পুলিশ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। খবর বিবিসির।

 

পুলিশ কমিশনার জানিয়েছেন, গ্রেফতার করতে গিয়ে এভাবে শ্বাসরোধ করার প্রক্রিয়া অনুসরণ করা ‘অত্যন্ত আপত্তিকর’। খুব দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে রোববারই বিনাবেতনে সাসপেন্ড করা হয়েছে ওই অফিসারকে।

 

তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। ভিডিওতে দেখা যায়, রিচার্ড বেলভিউকে গ্রেফতার করার সময়ে মাটিতে ফেলে তার গলা দুই হাতের চাপে পিষে দিচ্ছেন অফিসার।

 

পেছন থেকে কেউ একজন বলছেন, থামুন, তার শ্বাসরোধ করবেন না। সেই কথা শুনে অফিসার হাত আলগা করেন এবং বাকিরা তার শার্ট ধরে মাটি থেকে টেনে তোলেন।

 

এ ঘটনার পর শহরের মেয়র বলেন, ‘কুইন্সের এ ঘটনায় নিউইয়র্ক পুলিশ তদন্ত করে এক অফিসারকে সাসপেন্ড করেছেন। এভাবে সঙ্গে সঙ্গে কোনো পদক্ষেপ নেয়া জরুরি ছিল।

 

এদিকে চার সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে অব্যাহত রয়েছে বর্ণবাদবিরোধী বিক্ষোভ। মার্কিন পুলিশের তহবিল বন্ধ এবং দাস ব্যবসা ও উপনিবেশ সম্পর্কিত ঐতিহাসিক ব্যক্তিদের মূর্তি ও ভাস্কর্য সরিয়ে নেয়ার দাবি জানাচ্ছেন বিক্ষোভকারীরা।

 

এরই মধ্যে ওয়াশিংটনে সোমবার সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড জনসনের মূর্তি গুঁড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা চালান তারা। বিক্ষোভকারীদের দাবির মুখে নিউইয়র্ক মিউজিয়ামের সামনে প্রথম প্রেসিডেন্ট জর্জ ওয়াশিংটনের মূর্তিও সরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

 

সিয়াটলে ‘পুলিশ মুক্ত এলাকা’ থেকে বিক্ষোভকারীদের সরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সিটি মেয়র জেনি ডারকান। নতুবা শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে তুলে দেয়া হবে বলে হুশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।

চলতি সপ্তাহে এ এলাকায় পৃথক দুই গোলাগুলির ঘটনায় একজনের মৃত্যু ও আরেকজন আহত হওয়ার পর সোমবার এই নির্দেশ দেন তিনি। নিউইয়র্ক টাইমস, ওয়াশিংটন পোস্ট ও সিএনএন।

 

গত মাসে (২৫ মে) মিনেসোটার মিনিয়াপোলিস শহরে কৃষ্ণাঙ্গ যুবককে হাঁটু দিয়ে ঘাড় ধরে চেপে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় সঙ্গে সঙ্গেই চার পুলিশ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়।

 

তা সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে শুরু হয় প্রচণ্ড বিক্ষোভ। চার সপ্তাহের মাথায় বিক্ষোভের মধ্যেই গত রোববার নিউইয়র্কে আটকের সময় আরেক কৃষ্ণাঙ্গ যুবকের ঘাড় চেপে ধরার ঘটনা ঘটে।

 

প্রাথমিক তদন্ত শেষে ওই দিনই অভিযুক্ত এক পুলিশ কর্মকর্তাকে বেতন ছাড়াই বরখাস্ত করে নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্ট। বরখাস্তের ব্যাপারে পুলিশ কমিশনার ডারমোট শিয়া এক বিবৃতিতে বলেন, ‘এ ঘটনায় পুরোদমে তদন্ত চলছে। তবে প্রশ্নের কোনো সুযোগ নেই যে, এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ প্রয়োজন ছিল।’

 

ঘটনাটি ঘটে কুইন্স শহরের রকওয়ে সেকশনের বিচ ব্রডওয়াক এলাকায় রোববার সকালে। ঘটনার কয়েক মিনিটের মধ্যে এর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনাটি মোবাইলে ভিডিও করে কয়েকজন পথচারী। এর পরই তদন্ত শুরু করে নিউইয়র্ক পুলিশের ইন্টারনাল অ্যাফেয়ার্স ব্যুরো।

 

ভিডিও দেখা যায়, ওই কৃষ্ণাঙ্গ যুবকের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করছে একদল পুলিশ। একপর্যায়ে এক কর্মকর্তা যুবকের গলায় পা দিয়ে চেপে ধরে। পরে ওই যুবককে রিচার্ড রিকি বেলেভো বলে শনাক্ত করেন আইনজীবীরা।

 

পুলিশ রিচার্ডের বিরুদ্ধে বিশৃঙ্খল আচরণ, সরকারি কাজে বাধা প্রদান ও গ্রেফতার প্রতিরোধের অভিযোগ এনেছে। তবে এই অভিযোগে তাকে শাস্তি দেয়ার আবেদন নাকচ করে দিয়েছেন কুইন্সের ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি মেলিন্ডা কাৎজ।

সর্বশেষ আপডেটঃ ১:১২ অপরাহ্ণ | জুন ২৪, ২০২০