এবার প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে গরু বিক্রি করে ১৩ হাজার টাকা দিলেন রিকশাচালক
লোক লোকান্তরঃ মহামারি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে কর্মহীন মানুষের খাদ্য সহায়তা দিতে এবার জামালপুরের হতদরিদ্র রিকশাচালক হযরত আলী (৬৫) প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে গরু বিক্রির টাকা থেকে ১৩ হাজার টাকা জমা দিলেন। জামালপুর পৌর শহরের পাথালিয়া ছাতার মোড় এলাকায় বাস করেন হযরত আলী।
মঙ্গলবার (২৮ এপ্রিল) বিকেলে জামালপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. মোকলেছুর রহমানের কাছে টাকাগুলো জমা দেন তিনি।
জানা গেছে, হযরত আলী ২০০৬ সাল থেকে ঢাকায় রাজারবাগের কুসুমবাগ এলাকায় ভাড়া বাসায় থেকে রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন।
তার স্ত্রীসহ দুই মেয়ে ও দুই ছেলে রয়েছে। দুই মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। দুই ছেলের মধ্যে এক ছেলে খেটে খাওয়া শ্রমিক। আরেক ছেলে স্থানীয় এক বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ালেখা করছে।
করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে লকডাউনের কারণে হযরত আলী নিজেও কর্মহীন হয়ে পড়ায় স্ত্রীকে নিয়ে মাস খানেক আগে ঢাকা থেকে জামালপুরে চলে আসেন। ঢাকায় রিকশা চালিয়ে সংসার খরচ বাদে কিছু টাকা জমিয়ে একটি গরু কিনে এক ব্যক্তিকে গরুটি বর্গা দেন তিনি।
করোনা ভাইরাসের কারণে আয়-রোজগার না থাকায় সেই গরুটিও বিক্রি করে দিয়েছেন। গরু বিক্রির টাকা থেকে তিনি ১৩ হাজার টাকা করোনায় তার মতো কর্মহীন মানুষদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে দান করেন।
হযরত আলী বলেন, দেশের পরিস্থিতি ভালো না। অনেক মানুষের কষ্ট দেখে ভালো লাগছে না। বাঁচবো না মরে যাবো কে জানে! আল্লাহ বাঁচিয়ে রাখলে কাজ করে খেতে পারবো। তাই আমি আমার কষ্টের টাকায় কেনা গরু বিক্রি করে সামান্য কিছু টাকা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দিলাম।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. মোকলেছুর রহমান বলেন, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। রিকশাচালক হযরত আলীর মতো একজন দরিদ্র মানুষ তার কষ্টের জমানো টাকা থেকে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে ১৩ হাজার টাকা জমা দিলেন, এটা মহত্বের লক্ষণ।
তিনি আরও বলেন, যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে হযরত আলীর দান করা টাকাগুলো দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে পাঠানো হবে। তার এই অবদান সব সময় মনে রাখবে জেলা প্রশাসন।