বিপন্ন প্রজাতির লাজুক ‘বনরুই’ উদ্ধার
লোক লোকান্তরঃ মাছের মতো সারা শরীরে মোটা শক্ত আঁশ থাকায় প্রাণীটি ‘বনরুই’ নামে পরিচিত। নির্জন ও দুর্গম বনাঞ্চালে মাটিতে সুড়ঙ্গ করে এরা বসবাস করে। এরা মাটিতে প্রায় ১০-১৫ ফুট গভীর সুড়ঙ্গে থাকে। বনরুই নিশাচর ও লাজুক প্রকৃতির হয়ে থাকে।
প্রাণীটি গভীর রাতে খাবারের খোঁজে সুড়ঙ্গ থেকে বাইরে বের হয়। আবার আলো ফোটার আগেই সুড়ঙ্গের অন্ধকারে নিজেদের লুকিয়ে রাখে। ছোট ছোট পোঁকা মাকড়, পিঁপড়ার ডিম ও উইপোকা খেয়ে প্রাণীটি জীবন ধারণ করে।
এমন বিপন্ন প্রজাতির বনরুই ধরা পড়েছে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলায়। শ্রীমঙ্গলের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে প্রচুর বনরুই পাওয়া যায়। তবে উদ্ধারকৃত বনরুই বিরল ও বিপন্ন প্রজাতির।
বৃহস্পতিবার সকালে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার ইছবপুর গ্রামের একটি সবজি ক্ষেতে জালে বনরুইটি আটকা পড়ে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, শিমুল দেব নামে স্কুলছাত্র ইছবপুর গ্রামের এক সবজি খেতে জালের মধ্যে আটকে থাকতে দেখেন এই বন রুই। শিমুল আহত বনরুইটি জাল থেকে উদ্ধার করে নিজের বাড়িতে নিয়ে যান। সেখানে তার পরিচর্যা করেন।
খবর পেয়ে শ্রীমঙ্গলের বন্য প্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনের পরিচালক সজল দেব প্রাণীটিকে উদ্ধার করে তাদের সেবা আশ্রমে নিয়ে আসেন। বর্তমানে বনরুইটিকে সেবা ফাউন্ডেশনে নিবিড় পরিচর্যায় রাখা হয়েছে।
সজল দেব বলেন, উদ্ধারকৃত বনরুইটি বিপন্ন প্রজাতির। জালে আটকে থাকার কারণে পেছনের দুটি পায়ে সামান্য ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। চিকিৎসা করে সুস্থ করে তুলে শিগগিরই আবার লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে অবমুক্ত করা হবে।
সেবা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান সিতেশ রঞ্জন দেব জানান, বনরুই সাধারনত স্তন্যপায়ী সরীসৃপ বন্য প্রাণী। এর বৈজ্ঞানিক নাম ‘চায়নিজ পেনগলিন’। বছরে একবারই বাচ্চা দেয় বনরুই। এদের পায়ের নখ ও পাতা শক্ত প্লাস্টিকের মতো দেখতে নিশাচর বনরুই দিনে রাতে দ্রুত চলাচল করতে পারে।
ছবিঃ সংগৃহীত