কলকাতাকে হারিয়ে প্লে-অফে রাজস্থান
অনলাইন ডেস্ক,১৭ মে ২০১৫, রবিবার:
বাঁচা-মরার ম্যাচে জয়ী হলো রাজস্থান রয়্যালস। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন কলকাতা নাইট রাইডার্সকে ৯ রানে হারিয়ে আইপিএল’র এই আসরের প্লে-অফ নিশ্চিত করেছে ওয়াটসন-স্মিথরা। এ হারের ফলে কলকাতার পরের রাউন্ডে খেলার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
রোববার (১৭ মে) সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ ও মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের মধ্যকার ম্যাচটি টাই হলে রান রেট হিসেবে গম্ভীর-সাকিবদের প্লে-অফে খেলার একটা সুযোগ থাকবে। অপর ম্যাচে দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের কাছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু বড় ব্যবধানে হারলে রান রেটের সমীকরণে শাহরুখ খানের দলের মৃদু সম্ভাবনা থাকতে পারে।
এ ম্যাচে কলকাতার হয়ে প্রথম মাঠে নামেন পাকিস্তানের সাবেক তারকা অলরাউন্ডার আজহার মাহমুদ।
মুম্বাইয়ের ব্র্যাবোর্ন স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন রাজস্থান অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ। শেন ওয়াটসনের হার না মানা সেঞ্চুরিতে ভর করে কলকাতাকে ২০০ রানের চ্যালেঞ্জিং টার্গেট ছুঁড়ে দেয় রাজস্থান।
বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দলীয় আট রানের মাথায় প্যাভিলিয়নে ফেরেন গৌতম গম্ভীর (১ রান)। তের রান যোগ হতেই ব্যক্তিগত ১৪ রানে আউট হন ওপেনার রবীন উথাপ্পা। এরপর দলের হাল ধরেন মানিশ পান্ডে ও ইউসুফ পাঠান। দু’জন মিলে ৫৬ রানের পার্টনারশিপ গড়েন। ব্যক্তিগত ২১ রানে ধাওয়াল কুলকার্নির বলে ক্রিস মরিসের তালুবন্দি হন পান্ডে।
আন্দ্রে রাসেলের সঙ্গে আরো ৫৫ রানের মূল্যবান পার্টনারশিপ গড়েন ইউসুফ। কিন্তু, ২০ বলে ৩৭ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে রাসেল বিদায় নিলে চাপের মুখে পড়ে কলকাতা। ক্রিজে নেমে রানের খাতা না খুলেই সাজঘরে ফেরেন সুরিয়াকুমার যাদব। ১৪৬ রানের মাথায় ইউসুফের (৪৪) বিদায়ের পর ছয় রান করে আজহার মাহমুদও প্যাভিলিয়নে ফেরেন। হারের শঙ্কায় পড়া কলকাতার আশার প্রতীক হয়ে থাকেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব।
শেষ দুই ওভারে জয়ের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৩৬ রান। জেমস ফকনারের করা উনিশতম ওভারের প্রথম বলে সিঙ্গেল নিয়ে উমেশ যাদবকে স্ট্রাইক দেন সাকিব। এরপরই দৃশ্যপট বদলে যায়। পরের পাঁচ বলে ১৯ রান তুলে কলকাতাকে রীতিমত জয়ের সুবাস এনে দেন এই পেসার।
শেষ ওভারে জয়ের জন্য ১৬ রানের প্রয়োজন। এমন সমীকরণে মরিসের প্রথম বলেই লং অনে স্মিথের ক্যাচে পরিণত হন সাকিব (১৩)। তখনই কলকাতার প্লে-অফে খেলার স্বপ্নটা অনেকটাই ভেস্তে যায়। শেষ পর্যন্ত গৌতম গম্ভীরের দল ৯ উইকেট হারিয়ে ১৯০ রান করতে সমর্থ হয়। ১১ বলে ২৪ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে যাদব ও মরনে মরকেল ৪ রানে অপরাজিত থাকেন।
রাজস্থানের হয়ে দক্ষিণ আফ্রিকান পেস বোলার মরিস একাই চার উইকেট দখল করেন। এছাড়াও দু’টি করে উইকেট লাভ করেন কুলকার্নি ও ওয়াটসন।
এর আগে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ওয়াটসনের (১০৪*) বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে নাস্তানাবুদ হয় কলকাতার বোলাররা। এই অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যান ৫৭ বলে ৯ চার ও ৫ ছক্কার সাহায্যে শতক পূর্ণ করেন। আরেক ওপেনার অজিঙ্কা রাহানে ব্যক্তিগত ৩৭ রানে (২২ বল) সাকিবের থ্রোতে রান আউটের ফাঁদে পড়েন। ভারতের এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান ১৩ ম্যাচে ৪৯৮ রান করে এখন টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। নির্ধারিত ওভার শেষে ছয় উইকেট হারিয়ে ১৯৯ রানের বিশাল স্কোর দাঁড় করায় রাজস্থান।
কলকাতার হয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ তারকা রাসেল তিনটি উইকেট লাভ করেন।
অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ম্যাচসেরা হন ওয়াটসন।
উল্লেখ্য, পয়েন্ট টেবিলে ১৪ ম্যাচ শেষে ৭ জয়, ৫ হার ও ১ ড্রতে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ স্থানে অবস্থান করছে কলকাতা। সমান ম্যাচে ১৫ পয়েন্টে তিনে বেঙ্গালুরু ও ১৬ পয়েন্টে দুইয়ে রাজস্থান। এক ম্যাচ করে কম খেলা সানরাইজার্স ও মুম্বাই সমান ১৪ পয়েন্ট নিয়ে যথাক্রমে পাঁচ ও ছয় নম্বরে রয়েছে। শীর্ষে থাকা চেন্নার সুপার কিংসের পয়েন্ট সংখ্যা ১৮।