| বিকাল ৪:১৪ - শুক্রবার - ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ - ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ - ১৮ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

ময়মনসিংহের ৩ রাজাকারের আমৃত্যু কারাদণ্ড, ৫ জনের ২০ বছর করে

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত হত্যা, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, অপহরণ, আটক, নির্যাতনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের ৯ আসামির মধ্যে ৩ জনের আমৃত্যু কারাদণ্ড, ৫ জনের ২০ বছর করে কারাদণ্ড ও আব্দুল লতিফ নামের একজনকে খালাস দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

 

বৃহস্পতিবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে চেয়ারম্যান মো. বিচারপতি শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ রায় ঘোষণা করেন। অন্য বিচারপতিরা হলেন- বিচারপতি আমির হোসেন ও বিচারপতি আবু আহমেদ জমাদার।

 

রায়ে মো. সামসুজ্জামান ওরফে আবুল কালাম, এ এফ এম ফয়জুল্লাহ (পলাতক), আব্দুর রাজ্জাক মণ্ডলকে (পলাতক) আমৃত্যু দণ্ড দেয়া হয়েছে। ২০ বছর করে সাজা দেয়া হয় মো. খলিলুর রহমান, মো. আব্দুল্লাহ, মো. রইছ উদ্দিন আজাদী ওরফে আক্কেল আলী, আলিম উদ্দিন খান (পলাতক) ও সিরাজুল ইসলাম তোতাকে। আব্দুল লতিফকে খালাস দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।

 

আসামিদের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় চারজনকে হত্যা ও ৯ জনকে আটক এবং নির্যাতনের চারটি অভিযোগ রয়েছে।

 

এ মামলার ৯ আসামির মধ্যে একজনকে খালাস দেওয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এ পর্যন্ত রায়ে আসা ৪২টি মামলার ১১৪ আসামির মধ্যে এই প্রথম কেউ বেকসুর খালাস পেলেন। খালাস দেওয়া হয়েছে আসামি আবদুল লতিফকে।

 

রায় ঘোষণার পর রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী প্রসিকিউটর মো. মোখলেসুর রহমান বাদল গণমাধ্যমকে বলেন, এটিই প্রথম মামলা, যেখানে একজন আসামিকে খালাস দিলেন ট্রাইব্যুনাল। আর এটিই প্রথম মামলা, যেটিতে কোনো আসামির মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়নি।

 

এ মামলায় অভিযুক্ত অপর আসামি আব্দুল লতিফের বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে খালাস দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।

 

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় অপহরণ, আটক, নির্যাতন ও হত্যার মতো অপরাধের চারটি ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে আসামিদের বিরুদ্ধে।

 

মামলার ৯ আসামির মধ্যে কারাগারে থাকা পাঁচজনকে সকাল পৌনে ৯টায় ট্রাইব্যুনালের হাজতখানায় নিয়ে আসা হয়। পরে তাদের এজলাসে হাজির করে দূরত্ব বজায় রেখে বসানো হয়। আদালতের নির্দেশে তারা একে একে নিজেদের নাম বলেন।

 

এ মামলার আসামিদের মধ্যে গ্রেফতার মো. খলিলুর রহমান মীর, মো. শামসুজ্জামান ওরফে আবুল কালাম, মো. আব্দুল্লাহ, মো. রইছ উদ্দিন আজাদী ওরফে আক্কেল আলী ও আব্দুল লতিফ আদালতে উপস্থিত ছিলেন। আর এ এফ এম ফয়জুল্লাহ, আব্দুর রাজ্জাক মণ্ডল, সিরাজুল ইসলাম তোতা পলাতক।

 

তবে রায়ের দিন সকালে পলাতক আসামি আলিমুদ্দিন খান ট্রাইব্যুনালে হাজির হওয়ার ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। ট্রাইব্যুনাল সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রায় ঘোষণার পর সে আসল আসামি কিনা যাচাই করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

 

২০১৮ সালের ১৩ মার্চ তাদের বিচার শুরু হয়। বিচারকাজ শেষ হয় গত বছরের ২৬ জানুয়ারি।

 

২০১৪ সালের ১৬ অক্টোবর মামলার তদন্ত শুরু হয়ে ২০১৭ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি শেষ হলে ২০ ফেব্রুয়ারি প্রসিকিউনে জমা হয়। তদন্তে ৬০ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হলেও ২৯ জনকে সাক্ষী করা হয়েছিল। এ ছাড়া জব্দ তালিকার সাক্ষী ছিলেন আরও দুজন। তবে মামলার তদন্ত কর্মকর্তাসহ (আইও) মোট ১৮ জন আদালতে সাক্ষী দেন।

 

২০২০ সালের ২৬ জানুয়ারি মামলাটি রায়ের জন্য সিএভি অপেক্ষমান রাখেন আদালত। আজ রায় ঘোষণা হলো।

সর্বশেষ আপডেটঃ ১:৫৬ অপরাহ্ণ | ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২১