| সন্ধ্যা ৬:৫২ - বৃহস্পতিবার - ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ - ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - ১৫ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

ব্রহ্মপুত্র নদের বুকে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে তুলার চাষ

লোক লোকান্তরঃ  পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের বুকে জেগে উঠা বালির চরের তুলার চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। অন্য ফসলের চেয়ে তুলার ফলন ভাল এবং দাম বেশী হওয়ায় প্রতি বছর কৃষকদের তুলা চাষে আগ্রহ বাড়ছে।

 

জামালপুরের পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের বুকে জেগে উঠা বালির চরাঞ্চলের জমি একসময় পতিত ছিল। এসব পতিত জমিতে চাষীরা বিগত দিনেবিভিন্ন ফসল ফলানোর চেষ্টা করে নিষ্ফল হয়ে আসছিল। ফলে চরের বালি মাটির জমি সারা বছর পতিত পড়ে থাকতো।

 

তাই তুলা উন্নয়ন বোর্ডেও পরামর্শ ও সার্বিক সহযোগিতায় এসব অনাবাদি জমির মধ্যে হাইব্রিড ও উন্নত জাতের তুলা চাষ করা চাষিরা শুরু করে। অন্যান্য ফসলের চেয়ে তুলার চাষে খরচ কম এবং ফলন অত্যধিক ভাল এমনকি বেশী মুল্যে বিক্রি করে লাভবান হওয়া যায়।

 

তাই প্রতি বছর ব্রহ্মপুত্র নদেও বালির চওে তুলার চাষ দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। চলতি বৎসর মৌসুমের শুরুতে অত্যধিক বন্যা এবং প্রচন্ড শীতের কারণে তুলার ফলন কম হবার আশঙ্কা করছেন চাষীরা।

 

তুলা উন্নয়ন বোর্ড জানায়, চলতি বছর জামালপুর জেলায় ৪২৮ হেক্টর জমিতে তুলা চাষ হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় ২৫ হেক্টর বেশি।

 

জানাযায়,প্রতি বিঘা জমিতে ১৫/১৬ মণ তুলা উৎপাদন হবে বলে আশা করছেন স্থানীয় কৃষকেরা। প্রতি বিঘা জমিতে তুলা চাষ করতে কৃষকদের খরচ হয়েছে ৮/১০ হাজার টাকা হলেও প্রতিমণ তুলা ২ হাজার ২শ থেকে ২ হাজার ৫শ টাকা দরে বিক্রী করতে পারবে।

 

এ ছাড়াও তুলার গাছ থেকে লাকড়ী, পাতা থেকে সার এবং তুলার বীজ থেকে খৈল ও ভোজ্য তৈল পাওয়া যায়। এসব থেকে বিঘা প্রতি আরো ২/৩ হাজার খরচ টাকা উঠে আসবে।

 

বস্ত্র খাতের প্রধান কাঁচামাল হল তুলা। দেশে তুলার বর্তমান চাহিদা প্রায় ৪০ লাখ বেল।এসব তুলার চাহিদা পূরন করতে সিংহভাগ তুলা বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। দেশে বেশী তুলা চাষ করা হলে,তুলার উৎপাদন ও ক্রমশই বৃদ্ধি পাবে।

 

ফলে বিদেশ থেকে তুলা আমদানি হ্রাস পাবে। দেশ বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় থেকে সাশ্রয়ী হবে। জামালপুর পৌর শহরে পাথালিয়া এলাকার পাশ দিয়ে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের বালির চওে, নান্দিনা, নুরুন্দি এলাকায় তুলা চাষ শুরু হয়েছে।

 

চাষীদের অভিযোগ, তুলা চাষ করতে তুলা উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে তুলার বীজ ক্রয় এবং তাদের মাধ্যমেই উৎপাদিত তুলা বিক্রী করতে হয়। কমদামে বীজ ক্রয় এবং নির্ধারিত ক্রেতার বাইরে বিক্রী করতে পারলে তারা আরো বেশি লাভবান হতেন।

 

তুলা উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তা জানান, এবারও তুলার ফলন ভাল হবে এবং চাষীরা তাদের উৎপাদিত তুলার ন্যায্যা মূল্য পাবেন। এব্যাপারে জামালপুরের ভারপ্রাপ্ত তুলা উন্নয়ন কর্মকর্তা, মোঃ সালাউদ্দিন, জানান,কম মূল্য ও সহজে বীজ ক্রয় এবং উৎপাদিত তুলার ন্যায্য মূল্য পেতে সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিবেন এমন প্রত্যাশা করছে জামালপুরের তুলা চাষী।

সর্বশেষ আপডেটঃ ৪:০১ অপরাহ্ণ | মার্চ ০৩, ২০১৮