গৌরীপুর, ঈশ্বরগঞ্জ ও নান্দাইল তিন উপজেলায় পাচঁশতাধিক টেলিফোন সংযোগ বিকল
সাজ্জাতুল ইসলাম সাজ্জাত, গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) ঃ
ময়মনসিংহের গৌরীপুর, ঈশ্বরগঞ্জ ও নান্দাইল উপজেলায় বাংলাদেশ টেলিফোন এক্সচেঞ্জের (বিটিসিএল) প্রায় পাচঁশতাধিক টেলিফোন সংযোগ বিকল হয়ে পড়ে রয়েছে। টেলিফোন এক্সচেঞ্জ বিভাগের অব্যবস্থাপনা, জরাজীর্ণ লাইন মেরামত না করা, গ্রাহক অনিহা সহ নানা কারণে টেলিফোন বিভাগ তাদের গ্রাহক হারাচ্ছে। সরকারি কিছু অফিসে টেলিফোন সংযোগ সচল থাকলেও ব্যাক্তি পর্যায়ে নেয়া সংযোগগুলো বিকল হয়ে আছে। কর্তৃপক্ষকে বারবার তাগাদা দিয়েও সংযোগ ঠিক না হওয়ায় টেলিফোন ব্যবহার ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন অনেকে।
টেলিফোন বিভাগের কর্মচারী কর্মকর্তারা বলছেন, গ্রাহকদের সংযোগের কোনো সমস্যা হলে তাদের জানানো হয় না। সেট নষ্ট হয়ে গেলে পরিবর্তণ করা হয় না। নিয়ম মেনে সংযোগ বি”িছন্ন না করে টেলিফোন বিল দেওয়া থেকেও বিরত থাকে গ্রাহকরা। এছাড়া টেলিফোন এক্সচেঞ্জ অফিস গুলোতে কর্মকর্তা কর্মচারির সংখ্যা কম থাকায় এবং মেরামতের জন্য উপযুক্ত অর্থ বরাদ্দ না পাওয়ায় বিকল হওয়া সংযোগ মেরামত করা যা”েছ না। গ্রাহকদের অভিযোগ নষ্ট টেলিফোন লাইন মেরামত করতে কোনো উদ্যোগ কর্তৃপক্ষ না নিলেও প্রতিমাসে বিলের কাগজ দেওয়া হচ্ছে তাদের।
গৌরীপুর টেলিফোন এক্সচেঞ্জ অফিসের লাইনম্যান মো. আলী বলেন, এ উপজেলায় সংযোগ দেওয়ার ক্যাপাসিটি আছে ৪শ টি। কিন্তু মাঠ পর্যায়ে তাদের ৩২০ টি সংযোগ রয়েছে। এর মধ্যে সরকারি অফিস সহ ব্যক্তি পর্যায়ে সচল ছিলো ১৫০ টির মতো। টেলিফোন সেট খারাপ, ক্যাবল খারাপ, ব্যবহারে গ্রাহকদের অনিহার কারণে দিন দিন কমছে গ্রাহক। তিনি আরো বলেন, গত কয়েক দিনে পৌর এলাকার ১১ টি সড়কে ড্রেন ও পানি সাপ্লাইয়ের কাজ করতে দিয়ে টেলিফোনের ক্যাবল কেটে ফেলা হয়েছে। এতে সরকারি ও ব্যক্তিপর্যায়ের আরো অনন- ৮০ টি সংযোগ বিকল হয়ে পড়েছে। টেলিফোনের ক্যাবল লাইন কেটে ফেলায় গত বৃহস্পতিবার গৌরীপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।
ঈশ্বরগঞ্জ টেলিফোন এক্সচেঞ্জ অফিসের লাইনম্যান মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, এ অফিস থেকে সর্ব্বো”চ ২৫০ টি সংযোগ গ্রাহকরা নিয়েছিলো। তা এখন কমে কাগজপত্রে ২২০টি সংযোগ মাঠে রয়েছে। ২২০টি সংযোগের মধ্যে বিভিন্ন অফিসে প্রায় ৫০-৬০ সংযোগ সচল থাকলেও বাকি সংযোগ গুলো বিকল রয়েছে। জয়নাল আবেদীন বলেন, টেলিফোন সেট নষ্ট হলে গ্রাহকরা তা পরিবর্তন না করা, ক্যাবল সমস্যা ও জনবল না থাকা এবং আন্ডার গ্রাউন্ড ক্যাবল নষ্ট থাকায় সংযোগ গুলো সচল করা যা”েছ না। সরকারি কিছু অফিসে সংযোগ সচল থাকলেও স্বাস’্য কমপ্লেক্সে, খাদ্য বিভাগ সহ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে সংযোগ গুলো বিকল রয়েছে। এছাড়া টেলিফোন ভবনও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। সরকারি বরাদ্দ পেলে অকেজো সংযোগ গুলো চালু করা সম্ভব বলে জানান তিনি। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আলী সিদ্দিক বলেন, তার অফিসের টেলিফোনটি দীর্ঘ দিন ধরে বিকল হয়ে আছে। দুর্বৃত্তরা টেলিফোনের ক্যাবল কেটে নিয়ে যাওয়ায় ওই অবস’ার সৃষ্টি হয়েছে। টেলিফোন বিভাগের লোকজন এখন পর্যন- এটি মেরামত করে চালু করে দেয়নি।
নান্দাইল টেলিফোন এক্সচেঞ্জ অফিসের উপ-সহকারি প্রকৌশলী মো. জসিম উদ্দিন বলেন, উপজেলায় ৫০০ টি সংযোগ দেওয়ার ব্যবস’া থাকলেও মাঠে সংযোগ রয়েছে ২৩০ টি। এই ২৩০ টি টেলিফোন সংযোগের মধ্যে সরকারি অফিস গুলোতে সংযোগ সচল থাকলেও ব্যক্তি পর্যায়ে সংযোগ গুলো বিকল রয়েছে বলে জানা গেছে। ২৩০ টি সংযোগের মধ্যে ৬০-৭০ টি সংযোগ সচল থাকলেও টেলিফোন সেট সমস্যা, ক্যবল সমস্যা ও মোবাইল ফোনের আধুনিক যুগে টেলিফোনের প্রতি আগ্রহ কমে যাওয়ায় সংযোগ গুলো ব্যবহার হ”েছ না বলে জানা গেছে।
ঈশ্বরগঞ্জ ও নান্দাইলের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সহকারি প্রকৌশলী মো. জসিম উদ্দিন বলেন, টেলিফোন ব্যবহার কারীর সংখ্যা ক্রমান্নয়ে কমে যা”েছ। জরাজীর্ণ লাইন, গ্রাহকরা নষ্ট টেলিফোন সেট পরিবর্তন না করা, নিয়মিত বিল পরিষোধ না করা সহ নানা কারণে কমছে টেলিফোন ব্যবহার কারী। টেলিফোনের নষ্ট লাইন মেরামতে নিয়মিত কাজ চলছে বলে দাবি করেন তিনি।