| সকাল ৯:৪২ - শুক্রবার - ৮ই ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ - ২৩শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ - ২৩শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

অবশেষে ভালবেসেই ঘর বাঁধলো মৌসুমী!

শ্রীবরদী প্রতিনিধি:
দীর্ঘ দিনের একে অপরের মন দেওয়া নেওয়া। এর পর চুটিয়ে চুটিয়ে গভীর ভালবাসা দু’জনের। স্বপ্ন দেখেছিল ভালবেসেই দু’জন বাঁধবে সুখের সংসার। কিন’ এখানেই শত বাঁধা বিপত্তি। মৌসুমী গরীব কৃষকের মেয়ে হওয়ায় এ ভালবাসাকে কোন ভাবেই মেনে নিতে পারেনি প্রেমিক খাঁন জাহানের ধনাঢ্য পরিবার। মৌসুমির মাঝে সত্যিকারের ভালবাসা থাকলেও খাঁন জাহানের মনে ছিল শুধুই প্রতারণা। ছলনাময় প্রেমিকের বিশ্বাস ঘাতকতায় ভেঙ্গেগেল মৌসুমীর সোনালী সেই বিয়ের স্বপ্ন। অন্যত্র বিয়ে ঠিক হল তার প্রেমিকের। বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে বিষের বোতল নিয়ে অনশন চালালো মৌসুমি। গুণতে থাকলো বিয়ের প্রহর। কিন’ উল্টো তাকে মেরে বাড়িথেকে বেরকরে দিল প্রেমিকের পরিবার। তবুও হাল ছাড়েনি সে। বিয়ের দাবিতেই অনড় থাকলো সে। প্রেম মানেনা বাঁধা কি করবে আর রাঁধা। অবশেষে পুলিশ ও সাংবাদিকের হস-্যক্ষেপেই বিয়ে হলো মৌসুমীর। নির্যাতনের পর প্রেমিকার গলায় বিয়ের মালা পড়ালো প্রেমিক। এটি কোন গল্প বা সংলাপ নয়। এই গল্পের বাস-ব উদাহরণ দিল শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার কুড়িকাহনীয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ চিথলিয়া গ্রামের দরিদ্র কৃষকের কন্যা মৌসুমী। জানা যায় শ্রীবরদী উপজেলার দক্ষিণ চিথলিয়া গ্রামের ইসমাইল হোসেনের পুত্র খান জাহান ওরফে খান্‌জুর সাথে একই গ্রামের দরিদ্র কৃষক মোখলেছুর রহমানের কন্যা মৌসুমীর ভালবাসা চলে আসছিল দীর্ঘদিন যাবৎ। কিন’ হঠাৎ করে খান জাহানের পরিবার ১১ই আগষ্ট বৃহস্পতিবার পার্শ্ববর্তী গড়জরিপায় তার বিয়ের দিন ঠিক করে। ফলে বিয়ের দাবীতে অনশন কর্মসূচী গ্রহণ করে প্রেমিকা। অনশন করায় তার উপর নেমে আসে প্রেমিক পরিবারের অমানবিক নির্যাতন। বাধ্য হয়েই মৌসুমীর জেঠা মজিবুর রহমান এ বিষয়ে সহযোগিতা নিতে নিরুপায় হয়ে ছুটে যান শ্রীবরদী প্রেস ক্লাবে। ঘটনাটি খুলে বলেন ক্লাবের সাধারন সম্পাদক তারেক মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ রানা’র কাছে। পরবর্তীতে সাংবাদিকদের সহযোগিতায় শ্রীবরদী থানার ওসি এস.আলমের নিকট লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। ওসি এস.আলম ঘটনাটি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে অত্র থানার চৌকস এস.আই আক্তারুজ্জামানকে দ্রুত ঘটনাস’লে পাঠায়। এস.আই আক্তার সহ সাংবাদিকরা উভয় পরিবারের সাথে কথা বলে বিষয়টি সমাধানের জন্য সময় নির্ধারন করে দেয়। ফলে রাতভর চলে দেন দরবার। অবশেষে বৃহস্পতিবার দুপুরে উভয় পরিবারের সম্মতিতেই ৪ লক্ষ টাকা দেন মোহর ধার্য্য করে বিয়ে সম্পন্ন করে তাদের। আর খান জাহানের সাথে বিয়ে ঠিক করা গড়জরিপা গ্রামের কন্যার সাথেই ঐ দিনই বিয়ে হলো খান জাহানের আপন বড় ভাই নুর আলমের। এ প্রসঙ্গে মৌসুমী বলেন এস.আই আক্তার স্যার ও সাংবাদিক বকুল এবং রানা আংকেলের প্রচেষ্টাই আমার স্বপ্ন বাস-বায়িত হলো। শ্রীবরদী থানার এস.আই আক্তারুজ্জামান বলেন দুই পরিবারের মতামতেই বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। মৌসুমী এখন তার শ্বশুড় বাড়ীতে অবস’ান করছে। শ্রীবরদী থানার ওসি এস.আলম বলেন, শুধু মামলা করেই অনেক ঘটনার সমাধান করা যায় না। মামলা করলে দুই পক্ষই ক্ষতিগ্রস’ হয়। সঠিক পরামর্শ, সামাজিকতা, গণসচেতনতার মাধ্যমে অনেক বড় ঘটনার সঠিক সমাধান করা যায়। শ্রীবরদী থানা পুলিশের এমন উদ্যোগে স্বাগত জানিয়েছে শ্রীবরদী উপজেলাবাসী।

সর্বশেষ আপডেটঃ ৮:০৮ অপরাহ্ণ | আগস্ট ১৩, ২০১৬