ব্রহ্মপুত্র ফিরে পেলো তার হারানো যৌবন

স্টাফ রিপোর্টারঃ বছরের মাঝামাঝি সময়ে এসে কিছুটা সময়ের জন্য হলে ও ব্রহ্মপুত্র নদ ফিরে পেলো তার হারানো যৌবন। সারা বছর পায়ে হেটে নদ পাড়ি দেয়া মানুষগুলো এখন অপেক্ষায় থাকে নৌকার। আর নদের যৌবন নতুন করে আশা জাগায় মাঝিদের বুকে।
ব্রহ্মপুত্র নদ পৃথিবীর দীর্ঘতম নদনদীগুলির একটি এবং এশিয়া মহাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ নদী। সংস্কৃত ভাষায় ব্রহ্মপুত্রের অর্থ হচ্ছে “ব্রহ্মার পুত্র। ব্রহ্মপুত্রের পূর্ব নাম ছিল লৌহিত্য। এই বিশাল নদটির প্রভাবিত এলাকার আয়তন ৫,৮৩,০০০ বর্গ কিমি, যার ৪৭,০০০ বর্গকিলোমিটারের অবস্থান বাংলাদেশে। দেওয়ানগঞ্জের কাছে বাঁক নিয়ে ময়মনসিংহ জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে নদটি।
শুষ্ক মৌসুমে নদের বুকে জেগে উঠে চর আর বর্ষায় নদের যৌবনকালে আশেপাশের চরাঞ্চলের গ্রাম গুলো থাকছে বন্যার ঝুঁকিতে। এত কিছুর পরও ময়মনসিংহবাসী ব্রহ্মপুত্র নদের যৌবনকালের আনন্দ উপভোগ এড়াতে নারাজ। বিকেলের পর থেকেই সৌখিন জেলেরা ছিপ, বড়শি, ছোট জাল, মাছের খাবার নিয়ে পারি জমায় নদের বুকে। পানি বাড়ার কারনে অন্য সময়ের তুলনায় এসময় মাছ একটু বেশি পাওয়া যায়। পেশাদার জেলেরা বড় বড় জাল ফালায় মাছ ধরার জন্য আবার কেউ কেউ সিপ-বড়শি দিয়ে ছোট মাছ ধরে। অনেক সময় মাছ বিক্রির জন্য তাদের বাজারে যেতে হয় না। নদের পারেই বিক্রি হয়ে যায়।
ভ্রমণ পিয়াসু লোকজন শহরের ভ্রমণ কেন্দ্রগুলো বিশেষ করে সার্কেট হাউজ পার্ক, বিপিন পার্ক, সিলভার কেসেল, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা গুলতে হাজির হয় নদের যৌবন লুফে নিতে।
নদে মাঝে মাঝে হঠাৎ করে মাথা উঁচু করে উকি দেয় শুশুক। উকি দেয়ার সাথে সাথেই উৎসুক মানুষ ভিড় জমায় শুশুক কে আরেক ঝলক দেখার জন্য।
নৌকা ভ্রমনের পিপাসু লোকেরা নৌকায় করে পারি জমায় নদের বুকে। কারন সাড়া বছর তেমন একটা নদের পানি থাকে না। এইটাই উত্তম সময় নৌকা ভ্রমনের। আর এই সুযোগে মাঝিরা ও দাম হাকায় ইচ্ছে মতো।
ইলিয়াস নামের এক মাঝি জানান, যাত্রী ভেদে ঘণ্টা প্রতি দেড়শ থেকে দুইশত টাকা নেন তারা। কারণ এই সময়টাতেই নৌকা ভ্রমণের অধিক যাত্রী পাওয়া যায়।
এদিকে পানি বাড়ার কারনে বিপত্তি হইয়েছে ময়মনসিংহ শহরের চরাঞ্চলের মানুষ গুলোর। তাদের বেশির ভাগ ঘর-বাড়ি নদের পানিতে ডুবে রয়েছে। তারা আশায় বুক বেধে রয়েছে কখন নদের পানি কমবে আর তারা তাদের আবাসনে ফিরবেন। তবে বলা যায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বাড়ার ফলে সৃষ্ট ক্ষণস্থায়ী যৌবন যেমন অনেক মানুষ কে বিপাকে ফেলেছে, তেমনি অনেকের জন্য কিছু আনন্দময় সৃতি রেখে যাবে।