| সকাল ৯:৫৫ - শনিবার - ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ - ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - ১০ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

মন্ত্রিসভায় বিদ্যুৎ আইন-২০১৬ নীতিগতভাবে অনুমোদন

 ঢাকা, ৮ আগস্ট, ২০১৬ (বাসস) : মন্ত্রিসভা সাবোটেজের মাধ্যমে বিদ্যুৎ স্থাপনা ধ্বংস অথবা ক্ষতিগ্রস্ত করার দায়ে সবোর্চ্চ শাস্তির ব্যবস্থা রেখে এবং দেশের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য স্বাধীন ব্যবস্থায় অপারেটর চালু করার বিধান রেখে বিদ্যুৎ আইন-২০১৬ নীতিগতভাবে অনুমোদন করেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আজ বাংলাদেশ সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ বিষয়ে ব্রিফ করেন।
তিনি বলেন, খসড়া আইনে সেকশন ৪৬-এ সাবোটেজের মাধ্যমে পাওয়ার স্টেশন, সাব-স্টেশন,পাওয়ার লাইন, পোল এবং যন্ত্রপাতির মতো বিদ্যুৎ স্থাপনা ধ্বংস অথবা ক্ষতিগ্রস্ত করার অভিযোগে সর্বোচ্চ দশ বছর এবং সর্বনিম্ন ৭ বছর কারাদন্ড ও সর্বোচ্চ ১০ কোটি টাকা জরিমানা অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত করার বিধান রাখা হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ১৯১০ সালে প্রণীত আইনের আলোকে নতুন আইনটি প্রণীত হতে যাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, সুপ্রিম কোর্টের আদেশের ভিত্তিতে নতুন আইনে প্রকৃত আইনটি বাংলায় অনুবাদ করার প্রস্তাব এবং বিবদমান আইনে কিছু নতুন ধারা সংযোজন করা হয়েছে।
আলম বলেন, খসড়া আইনের সেকশন-১১-তে বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদানের ক্ষেত্রে প্রাথমিক পরিদর্শনের জন্য দায়দায়িত্ব দিতে ’প্রধান বিদ্যুৎ পরিদশর্ক’ পদ এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের পাওয়ার ডিভিশনের অধীন পরিদশর্কের অধীন অন্যান্য কর্মচারির পদ সৃষ্টির প্রস্তাব করা হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরো বলেন, লাইসেন্সের সংজ্ঞায় সেকশন-২-এর সাব-সেকশন ১৮ সংযোজন করা হয়েছে। এতে বিদ্যুৎ উৎপাদন, বিতরণ ও সরবরাহের জন্য বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন লাইসেন্স প্রদান করবে।
আলম বলেন, সমন্বয়ের ভিত্তিতে দেশের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা পরিচালনা করতে ইন্ডিপেন্ডেন্ট সিস্টেম অপারেটর (আইএসও) নামে একটি নতুন প্রতিষ্ঠান করতে সেকশন-৪-এর অধিন নতুন এই প্রস্তাবটি দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, সারাদেশের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা এই অপারেটরের অধীন নিয়ে আসা হবে।

আলম বলেন, সরকারের পূর্বানুমতি ছাড়া কোন ব্যক্তি বা সংস্থা বিদ্যুৎ উৎপাদন, সঞ্চালন, বিতরণ অথবা সরবরাহ করতে পারবে না।
তিনি বলেন, সরকারের অনুমতি ব্যতিরে কোন ব্যক্তি অথবা সংস্থার বিদ্যুতের ব্যবহারকে ‘বিদ্যুৎ চুরি’ হিসেবে বিবেচনা করা হবে।
তিনি আরো বলেন, অবৈধভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহারের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি অথবা সংস্থাকে সর্বোচ্চ তিন বছরের জেল অথবা ব্যবহৃত বিদ্যুতের মূল্যের দ্বিগুণ জরিমানা অথবা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, কোন শিল্প অথবা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান অবৈধভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহার করলে পাঁচ বছরের জেল অথবা ব্যবহৃত বিদ্যুতের দ্বিগুণ জরিমানা অথবা এক লাখ টাকা জরিমানা করা হবে।
তিনি বলেন, এ ছাড়া, কোন ব্যক্তি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া বিদ্যুতের অবৈধ সাব-কানেকশন নিলে তাও শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে।
এসব ক্ষেত্রে অর্থাৎ সাব-কানেকশনের মাধ্যমে বিদ্যুতের অবৈধ সরবরাহের ক্ষেত্রে দুই বছরের জেল অথবা ১০ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দন্ড হতে পারে। অন্যদিকে সাব-কানেকশনের মাধ্যমে অবৈধভাবে বিদ্যুৎ গ্রহণের ক্ষেত্রে তিন বছরের জেল এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে।
জনাব আলম বলেন, এই প্রস্তাবিত আইনে বিদ্যুতের চুরি সনাক্ত ও রোধে এবং বিদ্যুতের অপব্যবহার প্রতিরোধে একটি ‘গোয়েন্দা সেল’ গঠনের বিধান রাখা হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, নতুন আইনে এই বিদ্যুৎ সেলকে একটি আইনী কাঠামোর মধ্যে আনার প্রস্তাব করা হয়েছে, যা এখন প্রশাসনিক ব্যবস্থার আওতায় রয়েছে।
মন্ত্রী ও সংশ্লিষ্ট প্রতিমন্ত্রীগণ বৈঠকে অংশ নেন। সংশ্লিষ্ট সচিবগণ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ আপডেটঃ ৯:২১ অপরাহ্ণ | আগস্ট ০৮, ২০১৬