| রাত ১২:১৭ - সোমবার - ৪ঠা ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ - ১৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ - ১৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

গত অর্থবছরে রেলের পশ্চিম জোনে রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৩৩২ কোটি ৫২ লাখ টাকা

রাজশাহী, ২ আগস্ট, ২০১৬ (বাসস): বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিম জোনে গত ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে ৩৩২ কোটি ৫২ লাখ টাকা রাজস্ব আয় হয়েছে। যা গত ২০১৪-১৫ অর্থ বছরের তুলনায় ২৬ কোটি ৮৬ লাখ টাকা বেশি।
গত অর্থবছরে অর্জিত রাজস্বের মধ্যে রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলে যাত্রী সেবা থেকে আয় হয়েছে ১শ’ ৮৪ কোটি ১৮ লাখ টাকা এবং পণ্য পরিবহনের মাধ্যমে আদায় হয়েছে ৮৪ কোটি ৬৫ লাখ টাকা।
অতিরিক্ত প্রধান বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপক শাহ্ নেওয়াজ রাজস্ব আদায়ের সার্বিক চিত্র তুলে ধরে বাসসকে জানান, রেল বিভাগের নানামুখী সমস্যা থাকা সত্ত্বেও পর্যায়ক্রমে এর আয় বেড়ে চলেছে।
রাজশাহী, রংপুর এবং খুলনা নিয়ে রেলওয়ের পশ্চিামাঞ্চলে ৪৪টি আন্তঃনগরসহ রাজধানী ঢাকা ছাড়াও মোট ১৩৫টি ভিন্ন ভিন্ন রুটে রেল যোগাযোগ পরিচালনা করে। এছাড়া ৪৪টি লোকাল এবং কমিউটার ও শাটল ট্রেন বিভিন্ন স্বল্প দূরত্বে যাতায়াত করে, যা যাত্রীদের কাছে খুব জনপ্রিয়।
শাহ্ নেওয়াজ জানান, পশ্চিমাঞ্চলের ২৭ টি প্রধান রেল স্টেশনকে আধুনিকায়নের মাধ্যমে স্টেশনগুলো থেকে আসন সংরক্ষণ ও টিকিট বিক্রির কার্যক্রমকে কম্পিউটারাইজড করা হয়েছে। এখন রাজশাহীসহ কয়েকটি স্টেশনে টিকিট বিক্রি, আসন সংরক্ষণ এবং যাত্রীদের বিভিন্ন সেবা অনলাইনের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হয়। যাত্রী সংখ্য বৃদ্ধি পাওয়ায় এর ব্যবস্থাপনায় রেলের কর্মচারীরা সমস্যায় পড়ছে।
তিনি বলেন, যেসব স্টেশনগুলো অকার্যকর অবস্থায় আছে সেগুলোকে কার্যকর করা হলে রাজস্ব আদায় আরো বাড়ানো সম্ভব।
পশ্চিমাঞ্চলের প্রধান চিপ অপারেটিং সুপারেন্টেন বেলাল উদ্দিন জানান, স্টেশন মাস্টার, পয়েন্টস ম্যান, সান্টিং ম্যান, বুকিং ক্লার্কসহ বিভিন্ন লোকবলের অভাবে এই অঞ্চলের ২২৬টি স্টেশনের মধ্যে মাত্র ৮২ টি স্টেশন এখন কার্যকর রয়েছে।
এর আগে এ বিভিন্ন রুটে জোনের ছয়টি মেইল ট্রেন ও ২৫ টি লোকাল ট্রেন পরিচালিত হচ্ছিল। কিন্তু লাইন ম্যান, প্রকৌশলী, রেক ও লোকো মাস্টার ইত্যাদি লোকবলের অভাবসহ বিভিন্ন সমস্যার কারণে এখন এসব রুটে রেল যোগাযোগ সংকুচিত হয়ে গেছে। তিনি জানান, রেলে যাতায়াতের জন্য অসংখ্য সাধারন যাত্রীতের উৎসাহ রয়েছে। বন্ধ হয়ে যাওয়া ষ্টেশন ও ট্রেনগুলো দ্রুত চালু করা হলে রাজস্ব আয় আরও বাড়বে।
পশ্চিমাঞ্চলের রেলের মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী খায়রুল আলম বাসসকে বলেন, লোকবল নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন হলে এ অঞ্চলের অকার্যকর অনেক স্টেশন কার্যকর করা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, সরকারের সামাজিক, পরিবেশ ও আর্থিক উন্নয়নের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে রেলের আধুনিকায়ন, ব্যবস্থাপনায় উন্নতি করা হচ্ছে এবং সর্বত্র যাত্রীসেবায় নিরাপত্তা,বিস্বস্থতা,সময়মত পৌছানোর ক্ষেত্রে অঙ্গীকারাবদ্ধ।
তিনি জানান, সিঙ্গেল লাইন, ইন্টারলকিং , টেলিকম ব্যবস্থা, লোকোমোটিভস, কোচ এবং অন্যান্য রোলিং স্টোক আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ২৪০ টি কোচ এবং নতুন ১৬টি রেল ইঞ্জিন পশ্চিমাঞ্চলের রেল বহরে যুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া শিগগরি ২০০টি নতুন বগিও যুক্ত করা হবে।
প্রকৌশলী আলম বলেন, পশ্চিমাঞ্চলের রেল লাইন ও স্টেশনের অবকাঠামো পর্যায়ক্রমে সংস্কার ও উন্নয়ন করা হচ্ছে। বাংলাদেশ রেলওয়েকে টেকসই করে গড়ে তুলতে আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন রোলিং স্টোক, ট্রাক মেটেরিয়ালস্ এবং সিঙ্গেলিং সিস্টেম প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
রেল যোগাযোগকে আধুনিকায়ন ও জনপ্রিয় করে তুলতে ভারত থেকে ১২০টি বিলাশবহুল ও ইন্দিানেশিয়া থেকে ৫০টি বগি কেনা হয়েছে। এর মাধ্যমে যাত্রী সেবা এবং রেল যোগাযোগের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান হয়েছে।
পশ্চিমাঞ্চলের ৭৯০ কিলোমিটার রেল লাইন ২ হাজার ৯’ ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে সংস্কার করা হয়েছে। এছাড়া, ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬৮টি স্টেশন আধুনিকায়ন করা হয়েছে।
এছাড়া, ৯৯ হাজার ৫শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন রুটের ২শ’ ১১ কিলোমিটার রেল লাইনের নির্মাণ কাজ দ্রুত বেগে এগিয়ে যাচ্ছে।
প্রকৌশলী আলম বলেন, আগামী দুই তিন বছরের মধ্যে এই উন্নয়ন প্রকল্পগুলো সম্পন্ন হলে রাজস্ব আদায়সহ রেল বিভাগের ব্যাপক উন্নতি সাধন হবে।

সর্বশেষ আপডেটঃ ৭:৪১ অপরাহ্ণ | আগস্ট ০২, ২০১৬