| সকাল ৯:২৫ - শুক্রবার - ৮ই ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ - ২৩শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ - ২৩শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

মদনে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ

সুদর্শন আচার্য্য মদন নেত্রকোণা ঃ নেত্রকোণার মদন সরকারী হাজী আব্দুল আজিজ খান ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ শফিকুলের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও নানা দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে।

অভিযোগে প্রকাশ,ভাটী বাংলার মানুষের দাবীর কথা বিবেচনা করে বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ১৪ মে ২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠানটি জাতীয়করণ করেন। গত ২৩ মে ২০১৫ ইং তারিখে অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ শফিকুল ইসলাম কলেজে যোগদানের পর ৩ জন শিক্ষক নিয়ে একটি সিন্টিকেট তৈরি করেছেন। এমনকি তিনি যথা সময়ে কলেজে আসেন না। আর্থিক সুবিধা ভোগের ক্ষেত্রে তার সিন্টিকেট নিয়ে এক অনন্য দৃষ্টান- স’াপন করেছেন। সাধারণ শিক্ষকরা তাঁদের অনিয়ম,দুর্নীতি নিয়ে প্রতিবাদ করলে অধ্যক্ষ মহোদয় শিক্ষকদের কে পাতলা কাগজ (শোকজ) ধরিয়ে দেওয়ার হুমকি প্রদান করেন ।। অভিযোগে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের ৯টি অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে
২০১৫ সালের এইচ.এস.সি পরীক্ষায় অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে পূনঃভর্তির নামে সকল বিষয়ের ক্ষেত্রে ৫শ টাকা ও ১ ও ২ বিষয়ের জন্য ৩শ টাকা রশিদের মাধ্যমে আদায় করে প্রায় লক্ষাদিক টাকা আত্মসাৎ করেছেন। বিভিন্ন শ্রেণিতে ভর্তি ও ফরম ফিলাপের সময় নির্ধারিত ফির চেয়ে ২শ টাকা থেকে ৩শ টাকা অতিরিক্ত আদায় করা হয় এবং শিক্ষার্থীদের প্রদত্ত রশিদের চেয়ে কলেজ অংশের রশিদে ২শ টাকা থেকে ৩শ টাকা কম লেখে ব্যাংকে জমা দেওয়া হয়েছে। ২০১৬ সনের এইচ.এস.সি পরীক্ষার্থী ৭শ ৪২ জনের নিকট থেকে এডমিট কার্ড দেওয়ার সময় ১শ টাকা থেকে ২শ টাকা অবৈধ ভাবে আদায় করা হয়। ১৪ মে ২০১৩ইং তারিখে কলেজটি সরকারি হওয়ার পরও অদ্যাবধি সরকারি নিয়মে কোন শিক্ষক পরিষদ ও একাডেমি কাউন্সিল গঠন করা হয়নি। অধ্যক্ষ মহোদয় পরিবারের লোকজন ও বন্ধু-বান্ধবদের কলেজে দাওয়াত দিয়ে কলেজের টাকায় আমোদ প্রমোদ করেন। বাউবি এইচ.এস.সি পরীক্ষার্থী ২০১৪ এর সময় অধ্যক্ষ মহোদয় সমন্বয়কারীকে বাদ দিয়ে নিজেই পরীক্ষার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হয়ে পরীক্ষার্থীদের নকলের সুযোগ দেওয়ার কথা বলে ১ম ও ২য় বর্ষের ২শ ১২জন পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে ইংরেজির শিক্ষক মুহাম্মদ আজিজুল হক এর মাধ্যমে ৫শ টাকা করে আদায় করেন।
২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষে ডিগ্রি পাস প্রথম বর্ষের ৩শ ৩০ জন শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ইনকোর্স পরীক্ষার কথা বলে প্রভাষক মোঃ আমিরুল ইসলামের মাধ্যমে হাতে হাতে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে রসিদ বিহীন ১শ টাকা করে আদায় করেন। ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তিকৃত ৫শ ৬১ জন শিক্ষার্থীদে কাছ থেকে অর্ধ-বার্ষিক পরীক্ষার কথা বলে গণিতের শিক্ষকের মাধ্যমে হাতে হাতে রশিদ বিহীন সম্পূর্ণ অবৈধ ভাবে টাকা উত্তোলন করেন। কলেজ সরকারি হওয়ার পর থেকে সরকার কর্তৃক বিভিন্ন সময় বরাদ্দকৃত অর্থ ক্ষমতার অপব্যবহার করে মনগড়া ক্রয় কমিটির মাধ্যমে আত্মসাৎ করছেন। সর্বশেষ বিগত ১০ মার্চ ২০১৬ইং তারিখ প্রায় ২ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা কোন জিনিস ক্রয় না করেই ঠিকাদারের কাছ থেকে নগদ টাকা তাঁর সিন্ডিকেট নিয়ে আত্মসাৎ করেন। আর্থিক সুযোগ সুবিধার জন্য প্রথম শ্রেণী কর্মকর্তা বাদ দিয়ে ২ য় শ্রেণী কর্মকর্তা দ্বারা কমিটি গঠন করেন। এ ব্যাপারে এইচ এস সি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ কারী সৈকত হোসেন জানান,আমি ১ বিষয়ে ফরম ফিলাপ করতে ৯শ ৬০ টাকা দিয়েছি,অপর পরীক্ষা নূর নবী ২ বিষয়ে ফরম ফিলাপ করতে ১হাজার ৬০ টাকা দিয়েছে। ডিগ্রী ২ বর্ষের ছাত্র সারোয়ার জাহান জানান,আমি মুক্তিযোদ্বার সন-ান হিসেবে এ কলেজ থেকে আমাকে কোন সুযোগ সুবিদা দেওয়া হয় না। এমনকি উপবৃত্তি থেকেও আমাকে বঞ্চিত করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে অনুলিপি প্রাপ্ত উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান রহুল আমিন জানান,অভিযোগের অনুলিপি পেয়ে আমি বিষয়টি উপজেলা আইন শৃংখলা কমিটির মাসিক সভায় উপস’াপন করেছি। সরকারি কলেজের এ ধরণের দুর্নীতি রোধ না হলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতি আরো বাড়বে।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ খুরশীদ শাহরিয়র অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, যথাযথ ব্যবস’া গ্রহণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বরাবর অভিযোগটি প্রেরণ করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ শফিকুল ইসলাম জানান,সরকারি বিধিমোতাবেক কলেজের সকল কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। কেহ কোন দুর্নীতি করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস’া নেওয়া হবে। তবে এ কলেজে কোন দুর্নীত ও অনিয়ম করার সুযোগ নেই।

সর্বশেষ আপডেটঃ ৭:২৫ অপরাহ্ণ | জুলাই ৩১, ২০১৬