মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমরা চাইলে এক নোটিশের মাধ্যমে করতে পারতাম। কিন্তু তা না করে একটু সময় নিয়ে প্রস্তুতি নিয়ে এটি বাস্তবায়ন করা হবে। ৫ বছরের শিক্ষা নিয়ে পরিপূর্ণ প্রাথমিক শিক্ষা হয় না। এটা নড়বড়ে হয়। অষ্টম শ্রেণীর একটা সাটির্ফিকেট থাকলেও পিয়ন হওয়া যায়। আমাদাদের জীবন মান বাড়ানোর জন্য আমরা এটা করছি।
আমাদেরকে আরো আপগ্রেট হতে হবে। দেশের জন্য সমাজের জন্য। আমাদের ইভালুয়েশন দুর্বল মনিটরিং ব্যবস্থা নিতে হবে।’
মন্ত্রী বলেন, শিক্ষা ব্যবস্থায় গলদ ঢুকে গেছে এসব উদ্ভূত পরিস্থিতি থেকে শিক্ষকদের বেড়িয়ে শিক্ষকতার মতো মহান পেশায় আত্মনিবেদন করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এ ছাড়া তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের প্রতি সেবা ও আত্মনিবেদনের ঘাটতি রয়েছে। এ সংকট কাটিয়ে উঠতে আগত শিক্ষকদের প্রতি আহবান জানান।
তিনি বলেন, ‘আমাদের এখন খেয়াল রাখতে হবে সন্তানদের প্রতি, শিক্ষার্থীদের প্রতি। তাদের একজন মানুষের মতো মানুষ হতে উদ্বুদ্ধ করতে হবে’।
অষ্টমশ্রেণির মানসম্মত শিক্ষাব্যবস্থা নিশ্চিতে কম্প্রিহেনসিভ পাঠ্যক্রম তৈরি করার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক বলেন, অষ্টম শ্রেণির শিক্ষাপদ্ধতি পরিবর্তন করা ছাড়াও শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে আরও সতর্ক হলে আরও মানসম্মত পাঠদান পদ্ধতি নির্ধারণ করা গেলে দেশে জঙ্গী তৈরি হবে না।
শিক্ষানীতি ২০১০ এর ২ অধ্যায়-এর অনুচ্ছেদ-১-এ প্রাথমিক শিক্ষার মেয়াদ ও বাস্তবায়ন সম্পর্কে চারটি পদক্ষেপ গ্রহণ করার উপর গুরুত্বারোপ করা হয়। প্রাথমিক শিক্ষার মেয়াদ পাঁচ বছর থেকে বৃদ্ধি করে আট বছর অর্থাৎ অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত সম্প্রসারণ করা হবে।
এতে উল্লেখ করা হয়, প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত প্রাথমিক শিক্ষার নতুন কার্যক্রম, পাঠ্যপুস্তক এবং শিক্ষক নির্দেশিকা প্রণয়ন করা, প্রাথমিক পর্যায়ে সকল শিক্ষকের জন্য শিক্ষাক্রম বিস্তারসহ শিখন-শেখানো কার্যক্রমের ওপর ফলপ্রসূ ব্যবস্থা গ্রহণ, শিক্ষা প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনার প্রয়োজনীয় পুনর্বিন্যাস এবং সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভৌত সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি এবং শিক্ষকের সংখ্যা বাড়ানো,যথাযথ পদ্ধতি অনুসরণ কওে আট বছরব্যাপী প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়ন ২০১৮-এর মধ্যে ছেলে-মেয়ে, আর্থ-সামাজিক অবস্থা এবং জাতিসত্তা নির্বিশেষে পর্যায়ক্রমে দেশের সকল শিশুর জন্য নিশ্চিত করা উল্লেখযোগ্য।
কর্মশালার আগে প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩ হাজার ৫০৪টি ল্যাপটপ ও ৫ হাজার ৯৪১টি মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর বিতরণ করেন।
পর্যায়ক্রমে দেশের প্রতিটি বিদ্যালয়ে একটি করে ল্যাপটপ ও মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর বিতরণ করা হবে। ২০১৬-১৭ অর্থবছরেই ৬৪ হাজার স্কুলে ল্যাপটপ ও প্রজেক্টর বিতরণের লক্ষ্যে কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
উল্লেখ্য, ল্যাপটপ বিতরণের ক্ষেত্রে ৫ম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে যে সকল বিদ্যালয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ আছে এবং আইসিটি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষক রয়েছে সেসকল বিদ্যালয়কে অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে।
কর্মশালায় হুমায়ুন খালিদ বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষাকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত করা এটা আমাদের দীর্ঘ মেয়াদী তাগিদ। এটি একটি চ্যালেঞ্জও।’