| সকাল ৬:৫৮ - রবিবার - ৩রা ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ - ১৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ - ১৮ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

ময়মনসিংহে ১০ নির্বাচন অফিসারের কাছে সেল ফোনে সর্বহারা পার্টির চাঁদা দাবি, নইলে প্রাণনাশের হুমকী

স্টাফ রিপোর্টার, ২০ এপ্রিল ২০১৬, বুধবার
ময়মনসিংহ জেলার ১০টি উপজেলার ১০জন উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং কর্মকর্তা এবং ৩ জন নির্বাচন অফিসের কর্মচারীর মুঠোফোনে সর্বহারা পার্টির পরিচয়ে চাঁদা দাবি করা হয়েছে। চাঁদা না দিলে তাদের পরিবারের সদস্যদের অপহরণ ও হত্যার হুমকি দিয়েছে। এই ঘটনায় ময়মনসিংহের বিভিন্ন থানায় বুধবার সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।
জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের অফিস সহকারী আবদুর রশিদকে দেয়া হুমকীতে মুঠোফোনে কথিত সর্বহারা নেতা মহিউদ্দিন বলেন, ‘সর্বহারা দলের কিছু সদস্য বাংলাদেশের বাইরে নানা কারণে অসুস’ এবং সমস্যায় আছে। তাদের বাচাঁতে টাকার প্রয়োজন। তোকে ১৫ হাজার টাকা এক ঘন্টার মধ্যে দিতে হবে, নইলে তোর সন্তানকে জবাই করে একশত টুকরা করে জেলা নির্বাচন অফিসের সামনে ফেলে রাখবে আমাদের ছেলেরা। রশিদ তুই যদি চ্যালেঞ্জ করিস তাহলে র‌্যাব, পুলিশ ও ডিবিকে খবর দে, দেখ তারা তোর সন্তানদের বাচাঁতে পারে কিনা।
সর্বহারা পার্টির হুমকি পাওয়া ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়ার রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. শানিয়াজ্জামান বলেন, মঙ্গলবার বিকেল ৩টা ৪২ মিনিটে তাঁর মুঠোফোনে একটি কল আসে। কলদাতা তাঁকে সর্বহারা পার্টির নাম ব্যবহার করে বলেন, ‘আজকে তোর শেষ দিন। সাবধান।’ বলে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করা হয়। তিনি ফুলবাড়ীয়ার নাওগাঁও, ফুলবাড়িয়া, দেওখোলা ও বালিয়ান ইউনিয়নের রিটার্নিং কর্মকর্তা।
এ বিষয়ে ময়মসিংহের সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসার মোঃ আলিমুজ্জামান জানান, নান্দাইল ও গফরগাঁও বাদে জেলার ১০টি উপজেলার ১০জন উপজেলা নির্বাচন অফিসার এবং ৩জন অফিস সহকারীসহ জেলার ১৩জনকে তথাকথিত সর্বহারা পার্টির পরিচয়ে মোবাইলে চাঁদা দাবী করে হুমকী দিয়েছে। চাঁদা না দিলে তাদের তাদের পরিবারের সদস্যদের প্রাণনাশের হুমকী দিয়েছে কথিত সর্বহারা সদস্যরা। এ ব্যাপারে ময়মনসিংহর জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা এব্যাপারে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছে বলে মাঃ আলিমুজ্জামান জানান।
এ বিষয়ে ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার মইনুল হক বলেন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা পুলিশ যেকোনো ধরনের বেআইনি কাজ প্রতিরোধ করবে। সংশিৱষ্ট বিষয়ে অভিযোগ পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও তিনি জানান।

ময়মনসিংহ সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা জানান, বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে তাঁর মুঠোফোনে কল দিলেও ব্যস্ততার জন্য তিনি রিসিভ করতে পারেননি। তবে তিনি বলেন, ‘আমি শুনেছি জেলার সব নির্বাচন কর্মকর্তা এবং জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের অফিস সহকারী আবদুর রশিদকেও একই নম্বর থেকে হুমকি দেওয়া হয়েছে। একই সময়ে মুক্তাগাছার নির্বাচন কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীরকে হুমকি দেওয়া হয়েছে। হুমকি দেওয়া হয়েছে হালুয়াঘাট নির্বাচন কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান ঢালি ও ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আশিকুর রহমান সরকারকেও।’
মুক্তাগাছার নির্বাচন কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর জানান, মহিউদ্দিন নামের একজন ফোন করে তাঁকে বলেন, তাদের কিছু লোক ভারতে চিকিৎসাধীন আছেন। বিকেল সাড়ে ৪টার মধ্যে ৩০ লাখ টাকা লাগবে। হেল্প না করলে জোর করে নেবে বলে হুমকি দেয়।
একই ধরনের হুমকি পান ঈশ্বরগঞ্জের নির্বাচন কর্মকর্তা আশিকুর রহমান সরকার। তাঁকে গালিগালাজ করে টাকা চেয়ে হুমকি দেওয়া হয় বলে তিনি জানান।
নির্বাচন কর্মকর্তাদের জিডির বিষয়ে ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বদর্বল আলম খান জিডি তদন্ত করতে এস.আই মাসুদ জামালী ও ফুলবাড়ীয়া থানার ওসি রিফাত খান রাজিব জানান, ও তদন্ত করতে এসআই মো. কাইয়ুমকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ###

সর্বশেষ আপডেটঃ ৬:৩৯ অপরাহ্ণ | এপ্রিল ২০, ২০১৬