| সন্ধ্যা ৬:১১ - সোমবার - ৪ঠা ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ - ১৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ - ১৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

ত্রিশালে গ্রেফতারকৃত সবুজের স্বীকারোক্তি মুক্তিপন না দেয়াই হত্যা করা হয় স্কুলছাত্র সবুজকে

ত্রিশাল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি, ১৮ এপ্রিল ২০১৬, সোমবার
ময়মনসিংহের ত্রিশালে মুক্তিপনের টাকা না পাওয়ায় স্কুলছাত্রকে হত্যা করেছে বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছে মামলার গ্রেফতারকৃত একমাত্র আসামী সবুজ মিয়া (১৮)। গ্রেফতারকৃত সবুজ ত্রিশাল ধানীখোলা ইউনিয়নের উজান ভাটিপাড়া গ্রামের শরীফ উদ্দিনের ছেলে এবং নিহত সজিবের মামাত ভাই বলে জানান মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এস.আই) চাঁদ মিয়া।
নিহতের পরিবার, এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্র জানায়, গত ১৩ এপ্রিল বুধবার দুপুরে নিখোঁজ হয় ধানীখোলা ইউনিয়নের উজান ভাটিপাড়া গ্রামের শফিকুল ইসলাম ওরফে শফির ছেলে ধানীখোলা দৰিণ ভাটিপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১ম শ্রেণীর ছাত্র সজিব মিয়া (৭)। নিখোঁজের পর বুধবার সন্ধ্যায় ০১৯৮৪৯৫৮২৯১ ও ০১৯৬৯২৭৪৭৫০ এই দুটি মোবাইল নম্বর থেকে নিহত সজিবের বড় ভাই রাজিবের মোবাইলে ফোন করে ২লৰ টাকা মুক্তিপন দাবী করে। দাবীকৃত টাকা পরিশোধ না হওয়াই আবারও বৃহস্পতিবার রাত আনুমানিক ৮টার দিকে ঐ নম্বরগুলো থেকে রাতের মধ্যেই ময়মনসিংহে ২লৰ টাকা নিয়ে যেতে বলে এবং যদি টাকা নিয়ে না পৌছায় তবে সজিবকে হত্যা করা হবে বলে হুমকী দেয় নারায়নগঞ্জ থেকে সবুজের বন্ধু। দিনমুজুর দরিদ্র পিতা দাবীকৃত মুক্তিপন পরিশোধ করতে পারেনি। শুক্রবার বেলা ১২ টার দিকে ধানীখোলা উচ্চ বিদ্যালয়ের পিছনে ধান ৰেতে সজিবের লাশ পাওয়া যায়। স’ানীয়রা একটি শিশু বাচ্চার লাশ দেখতে পেয়ে ত্রিশাল থানা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। লাশ উদ্ধারের পর থেকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ত্রিশাল থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এস.আই) চাঁদ মিয়া মুক্তিপন চাওয়া মোবাইল নম্বরগুলো ট্যাকিং ও পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলে আসামী শনাক্ত করে এবং গত রোববার গভীর রাতে অভিযান চালিয়ে নিজবাড়ী থেকে হত্যাকারী নিহতের মামাত ভাই মোঃ সবুজ মিয়া (১৮)কে গ্রেফতার করা হয় । গ্রেফতার পরবর্তি প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সবুজ সজিবকে হত্যার বিষয়ে বিস্তারিত ঘটনা খুলে বলে। হত্যাকারী সবুজ স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দিতে বলেন, তেতুলপাড়ার কথা বলে সবুজ নিহত সজিবকে নির্জন জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে গলাটিপে হত্যা করে। পরে পার্শ্ববর্তী ধান ৰেতে ফেলে রেখে যায়। যে নম্বরগুলোতে মুক্তিপনের দাবীকৃত টাকা চাওয়া হয় সে সিমগুলো ভেঙ্গে ঘটনাস’লের পার্শ্বে একটি পুকুরে ফেলে দেয়া হয় বলেও স্বীকারোক্তি দেয় সবুজ।
এ ঘটনায় সজিবের পিতা মোঃ শফিকুল ইসলাম ওরফে শফি বাদী হয়ে ত্রিশাল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-১৯, তারিখ-১৬/৪/২০১৬ইং।
নিহত সজিবের পিতা শফিকুল ইসলাম জানান, আমার এ ছোট শিশু সন্তানটিতো কোন অন্যায় করেনি, কেন তাকে হত্যা করা হলো, আমি এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করি।
হত্যার ঘটনার ২দিনের মধ্যে মামলার মূল আসামীকে গ্রেফতারের পর গতকাল সোমবার এক সংবাদ সম্মেলন করে ত্রিশাল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মনিরুজ্জামান। তিনি বলেন, সবুজ গাঁজা সেবনের সময় সজিবের চোখে পড়ে যায়, আর বিষয়টি পরিবারকে জানিয়ে দিবে এমন কথা বলায় মুক্তিপন নাটক করে সজিবকে হত্যা করা হয়েছে। নিহত শিশু সজিব হত্যার ঘটনায় আমরা অতিদ্র্বত বিভিন্ন তথ্য ও মুক্তিপনের টাকা দাবীকৃত মোবাইল নম্বরের মাধ্যমে আমরা আসামীকে গ্রেফতার করতে সৰম হয়েছি।

সর্বশেষ আপডেটঃ ৯:৪৬ অপরাহ্ণ | এপ্রিল ১৮, ২০১৬