ঝিনাইগাতীতে ভূট্টা চাষে উজ্জল সম্ভাবনা
এম খলিলুর রহমান ঝিনাইগাতী (শেরপুর) প্রতিনিধিঃ ভৌগলিক কারনে জমির উর্বরতা ও গুনাগুনের উপর ভিত্তি করে শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার বেশীর ভাগ চাষ যোগ্য জমিতে ভূট্রা চাষের উজ্জল সম্ভাবনা রয়েছে। প্রকৃতিগত ভাবেই ভারতের মেঘালয় রাজ্যের সীমান্তঘেষা হওয়ায় জেলা সদরের তুলনায় ঝিনাইগাতী উপজেলাটি আনুমানিক ২০-৩০ ফুট উচুতে এ উপজেলার অবস্থান। প্রতি বছর নভেম্বর মাস থেকে মে/জুন এই সময়ের মধ্যে পানির স্তর নেমে যায় ৮০-৯০ফুট নীচে। ফলে বোর চাষের মোক্ষম সময়ে কৃষি জমিতে এমনকি বাসা বাড়িতে ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনীয় পানির ব্যাপক হাহাকার দেখা যায়।
স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ কোরবান আলীর সাথে এ বিষয়ে কথা হলে, তিনি ঝিনাইগাতী উপজেলায় মাটির ভেদাভেদে এবং সময় মতো পানি সংকটের জন্য বোর চাষের চেয়ে ভুট্টা চাষকে উপযুক্ত বলে মনে করেন। কেননা বোর চাষে যে পরিমান সেচ লাগে, ভুট্টা চাষে সাড়ে তিন থেকে ৪মাস সময়ের মধ্যে মাত্র ৩বার সেচ দিতে হয়। ৩ধাপে সেচের মধ্যে চারা গজানো পর, থোর আসার পূর্বে এবং ধানা হওয়ার সময়ে। ভূট্টা চাষে ফলন বেশী, পুষ্টি বেশী, পরিশ্রম কম, ধানের তুলনায় ভুট্টায় লাভ বেশী এবং ভ্ট্টূার চাহিদাও রয়েছে দেশে বিদেশে সমান ভাবে। এছাড়াও একর প্রতি ধান হয় ১০০থেকে ১২০মন কিন্তু ভূট্টা হয় ১২০-১৩০ মণ। ধানের বাজার মূল্যে ৪-৬শত টাকা হলেও ভূট্টার মূল্য ৭-৯শত টাকা পর্যন্ত।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ কোরবান আলী জোরদাবী করে বলেন, উপজেলার প্রতাবনগর গ্রামে ফজু মেম্বারের ছেলে শাহিন সারোয়ার গত বছর আমার দপ্তরে আসেন ভূট্টা চাষ সর্ম্পকে পরামর্শ নিতে। আমি তাকে ভূট্টা চাষে সকল পরামর্শ ও সহযোগীতা দিয়ে ২একর ১৪কাঠা জমিতে ৫২হাজার টাকা খরচের বিনিময়ে ২শত ৮০মন ভূট্টা উৎপাদন করতে সক্ষম হন এবং প্রতিমন ৬শত টাকা দরে বিক্রি করে খরচ বাদে লাভ পান ১লক্ষ ১৬হাজার টাকা। এছাড়াও ওই ভূট্টা চাষ থেকে শাহিন সারোয়ার সারা বছরের জন্য গোখাদ্য এবং জ্বানালী পেয়ে যান। মেশিনের মাধ্যমে ভূট্টা ছাড়ানোর পর আটি/শাসগুলো স্থানীয় বাজারের চা ব্যবসায়ীরা জ্বালানী হিসেবে তা ক্রয় করেন। গত বছরের আশানুপাত ফলন হওয়ায় এবছর সে ৭একর জমি ভূট্টা চাষের আওতায় এনেছেন এবং ফলনও হয়েছে ভাল।
এ ব্যাপারে কৃষক শাহিন সারোয়ার সাথে কথা হলে তিনি এ প্রতিনিধিকে জানান, ধানের তুলনায় ভূট্টা চাষে পরিশ্রম কম, লাভ বেশী হওয়ায় আমি ভূট্টা চাষের প্রতি আমার আগ্রহী বেশী। আমার ফলনের অবস্থা দেখে এ এলাকার অনেক কৃষক আগামীতে ভুট্টা চাষ করার জন্য পরামর্শ নিচ্ছেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বলেন, ভুট্টা চাষ একটি লাভজনক ফসল, কম পরিশ্রমে, কম খরচে বেশী লাভ হয়। স্থানীয় কৃষি বিভাগ ভুট্টা চাষে আগ্রহী কৃষকদের সার্বিক ভাবে সহযোগীতার আশ্বাস দিন তিনি। এছাড়া ভুট্টা চাষের জন্য ব্যাংক ঋণেরও সুবিধা আছেবলে তিনি জানান।