বৈশাখে পথশিশুদের পাশে শিক্ষার্থীরা
ফাহিম মোঃ শাকিলঃ বৈশাখ সকল বাঙালীর প্রাণের উৎসব। সারা বছর বিদেশী সংস্কৃতিতে ডুবে থাকা সমাজের বিত্তবান বাঙালীরা আজ হাজার টাকা খরচ করে পান্তা ইলিশ খাচ্ছেন অথচ একই সমাজের দারিদ্রের আচলে ঢাকা পথ শিশুরা পেটের দায়ে বৈশাখের আনন্দ থেকে কত দূরে! এইসব পথ শিশুদের কষ্টের কথা মাথায় রেখে ময়মনসিংহ শহরের আনন্দ মোহন কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের গুটি কয়েক শিক্ষার্থী পহেলা বৈশাখের আনন্দ তাদের সাথে ভাগাভাগি করতে এগিয়ে এসেছে। এসব শিক্ষার্থীরা হলেন- ইকবাল, ইমন, শুভ, নওরিন, সাদিয়া, মৌ, হাসান ও দিপা।
ময়মনসিংহের জয়নুল আবেদিন পার্কে আজ বৈশাখী মেলা হচ্ছে। মেলাতে মানুষের ভিড়ে পা রাখার জায়গা হচ্ছেনা। হবেই বা কি করে হাজার খানিক স্টল আর তার থেকে কয়েকগুন মানুষ আজ পার্কে অবস্থান করছে। ছয় থেকে সাত জায়গায় সাংস্কৃতিক পরিবেশনার আয়োজন করা হয়েছে। কিন্তু দৃষ্টি চলে গেলো সার্কেট হাউজের মাঠে বিচ্ছিন্ন ভাবে বসে থাকা গুটি কয়েক ছেলে মেয়েদের দিকে। পরে তাদের সাথে কথা বললে তারা জানায় আজ পথ শিশুদের সাথে বৈশাখের আনন্দ ভাগ করে নিতে এসেছেন।
জানতে পারলাম, সপ্তাহ খানিক আগে কলেজ থেকে বারি ফেরার পথে এক পথ শিশুকে রাস্তায় কষ্ট করতে দখেছে। তাদের মাথায় চেপে বসেছে পথ শিশুদের জন্য কিছু করতে হবে। বড় কিছু করার সামর্থ্য নেই তাদের তবুও চুপটি করে বসে না থেকে কিছুটা হলেও পথ শিশুদের জন্য করতে হবে। তাই তারা পহেলা বৈশাখে ১১৫ জন পথ শিশুদের জন্য এক বেলা খাবারের আয়োজন করেছে। প্রতিজনের জন্য খরচ হয় ১০০ টাকা এবং অন্যান্য সব মিলিয়ে ১২/১৩ হাজারের খরচ হয়েছে কিন্তু তাতে কি! পথ শিশুদের হাসির সামনে এ যে একেবারেই মূল্যহীন।
শিক্ষার্থীদের মাঝে যে যত টাকা পেরেছে দিয়েছে। কিন্তু তাতে খুব বেশি শিশুদের খাবার দিতে পারবে না তার। পরে ফেসবুকে এই মহৎ কাজের জন্য আহ্বান জানায়। তাতে ৪/৫ জনের সাড়া ও পায় শিক্ষার্থীরা। পরে সম্মলিত প্রচেষ্টায় এই আয়োজন করা হয়।
এসব শিক্ষার্থীদের কোন সংগঠন নেই। না এরা রাজনৈতিক ফয়দার জন্য এসব করছেন। তারা এসব করছেন শুধু এবং শুধুমাত্র আত্মতুষ্টির জন্য।
শিক্ষার্থীদের মাঝে একজন ইমন জানান, এইবার আমদের আগে থেকে কোন পরিকল্পনা ছিল না। সামনের বার অবশ্যই আমরা এর পরিধি বাড়াবো।
আর একজন শিক্ষার্থী নওরিন জানান, সবাই মেলাতে যাচ্ছে, আমরা সকাল থেকে পথ শিশুদের সাথে আছি। আমদের এততুকুও খারাপ লাগছেনা, বরং আমরা এখান থেকে যা আত্মতুষ্টি পাচ্ছি তা খুব সহজে কেউ পায় না।