ঈশ্বরগঞ্জে আ’লীগ-বিদ্রোহী ধাওয়া পাল্টা সংঘর্ষে সাংবাদিকসহ আহত ৩২
ফারুক ইফতেখার সুমন,ঈশ্বরগঞ্জ প্রতিনিধিঃ ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে আ’লীগ-বিদ্রোহী মুখোমুখি নির্বাচনী সহিংসতায় পৃথক ঘটনায় সাংবাদিকসহ আহত ৩২।
সোমবার দুপুরে উপজেলার সরিষা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী ও বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় দুই পক্ষের সংঘর্ষে সাংবাদিকসহ অন্তত ২২ জন আহত হয়েছেন। ওই ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
উপজেলার ৩ নং সরিষা ইউনিয়নে রোববার রাতে বাধাটি বাজার ও গাঙ্গাইল মোড় এলাকায় দুইটি নৌকা প্রতীকসহ, একটি দোকান ভাংচুর ও লোটপাট করা হয় বলে অভিযোগ করেন আওয়ামী লীগের দলীয় চেয়ারম্যান প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান শাহজাহান ভূইয়া। এদিকে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী একরাম হোসেন ভুইয়া অভিযোগ করেন রোববার রাতে তার দুইটি অফিসে হামলা, বিভিন্ন এলাকায় নির্বাচনী পোস্টার ছিড়ে ফেলা ও ৫ কর্মীকে পিটিয়ে আহত করা হয়।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, আওয়ামী লীগের দলীয় চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহজাহানের সমর্থকরা বাধাটি বাজারে দেশীয় অস্ত্রনিয়ে অবস্থান নেয়। অপর দিকে বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকরা এনায়েতনগরে একরাম হোসেনের বাড়িতে অবস্থান নেয়। খবর পেয়ে পুলিশও ঘটনাস্থলে যায়। কিন্তু আওয়ামী লীগের দলীয় চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকরা দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোঠা নিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী একরাম হোসেনের বাড়ির দিকে রওনা হয়। পুলিশের অনুরোধ ওপেক্ষা করে বিদ্রোহী প্রার্থীর বাড়ির কাছে গেলে বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের সাথে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন।
সংঘর্ষের ছবি তুলতে গেলে দৈনিক সমকালের স্থানীয় প্রতিনিধি মোস্তাফিজুর রহমান ও দৈনিক মানবজমিনের উপজেলা প্রতিনিধি এফআই সুমন হামলার স্বীকার হন। দুই সংবাদ কর্মীকে শারীরিক ভাবে লাঞ্ছিত সহ সমকাল প্রতিনিধিকে অস্ত্রদিয়ে আঘাত করা হয়। ওই সময় তার কাছে থাকা ক্যামারা ছিনিয়ে নিয়ে যায় একরাম সমর্থকরা। তবে ওই ঘটনায় তাৎক্ষনিত দুঃখ প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী একরাম হোসেন ভুইয়া।
এদিকে রোববার রাতে উপজেলার সরিষা ইউনিয়নের সুটিয়া বাজারে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর নির্বাচনী অফিসে হামলা চালিয়ে ভাংচুরের অভিযোগ করেছেন চেয়ারম্যান প্রার্থী মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুর রহমান আকন্দ হলুদ। সোমবার খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রিয় শিল্প ও বানিজ্য সম্পাদক সাবেক এমপি আবদুস ছাত্তার। দলীয় বিদ্রোহী প্রার্থী শামছুল হক ঝন্টু অভিযোগ করেন, দলীয় চেয়ারম্যান প্রার্থীর লোকজন তার কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়ে দুই শিশুসহ অনন্ত ৫ জনকে আহত করেছেন। দুই শিশুকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) রুহুল আমীন তালুকদার বলেন, খবর পেয়ে দুটি ঘটনাতেই পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। সোমবার দুপুরে সরিষা এলাকায় দুই প্রার্থীর সমর্থকরা দেশীয় অস্ত্রনিয়ে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকায় ১ প্লাটুন অতিরিক্তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।