বন্ধ গণমাধ্যম খুলে দিয়ে সাংবাদিকদের কর্মস্থলে ফেরাতে হবে—–বিএফইউজে-ডিইউজে’র নেতৃবৃন্দ
অনলাইন ডেস্ক | ৩০ মার্চ ২০১৬, বুধবার,
দেশে বর্তমানে রেকর্ড সংখ্যক সাংবাদিক বেকার জীবন যাপন করছে বলে মন্তব্য করে সাংবাদিক নেতারা বলেছেন, কয়েক হাজার সাংবাদিক পরিবার দু:সহ সময় অতিবাহিত করছে। অনেকের সন্তানের লেখা পড়া বন্ধ হয়ে গেছে। অনেকে ঢাকা ছেড়ে গ্রামে গিয়ে বেঁচে থাকার সংগ্রাম করছেন। এমন অবস’া বাংলাদেশে আর কখনো হয়নি। বন্ধ গণমাধ্যম খুলে দিয়ে হাজার হাজার বেকার সাংবাদিককে কর্মস’লে ফেরানোর দায়িত্ব সরকারের।
আজ বুধবার (৩০ মার্চ) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে অবসি’ত ইউনিয়ন কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ধারাবাহিক সমাবেশের তৃতীয় দিনে সাংবাদিক নেতারা এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজে ও ঢাকা সাংবাদিক সাংবাদিক ইউনিয়ন-ডিইউজে’র যৌথ উদ্যোগে শওকত মাহমুদ ও মাহমুদুর রহমানের অবিলম্বে মুক্তি, সম্পাদক ও সাংবাদিকদের বির্বদ্ধে হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার, বন্ধ সব মিডিয়া খুলে দেয়া, সাগর-র্বনীসহ সব সাংবাদিকের খুনীদের গ্রেফতার ও বিচার, নবম ওয়েজবোর্ড গঠনের দাবীতে এ সাংবাদিক সাবেশের আয়োজন করে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদ ও সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের পরিবারে গভীর অমানিষা নেমে এসেছে। সরকার সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে আটকে রেখে তাদের জীবনকে বিপন্ন করে তুলেছেন। অবিলম্বে তাদের মুক্তি দিতে হবে।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কবি আবদুল হাই শিকদারের সভাপতিত্বে এবং যুগ্ম সম্পাদক শাহীন হাসনাতের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক র্বহুল আমিন গাজী, বিএফইউজে মহাসচিব এম. আবদুলৱাহ, সাবেক মহাসচিব এম এ আজিজ, ডিইউজে’র সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক বাকের হোসাইন, বিএফইউজে’র সাবেক সহসভাপতি নুর্বল আমিন রোকন, ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি এ কে এম মহসীন, ডিইউজে’র সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম ও সৈয়দ আলী আসফার, বিএফইউজের সাংগঠনিক সম্পাদক মো: শহিদুল ইসলাম, ডিইউজের কোষাধ্যৰ শহীদুল ইসলাম, বিএফইউজের নির্বাহী সদস্য আসাদুজ্জামান আসাদ, সাংবাদিক নেতা জাকির হোসেন, আবদুস সেলিম, কবি কামার ফরিদ, সাখাওয়াত ইবনে মইন চৌধুরী, জসিম মেহেদী, ডি.এম. আমির্বল ইসলাম অমর, খন্দকার আলমগীর হোসেন, সাখাওয়াত হোসাইন মুকুল, আ: মান্নান, একাব্বর আলী, মো. বোরহান উদ্দিন, মতিউর রহমান সরদার, জেসমিন জুঁই প্রমুখ।
র্বহুল আমিন গাজী বলেন, যেসব দাবি আদায়ে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি, সেসব দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। অনেক সাংবাদিক আজ বেকার। বেকারত্বের অভিশাপ নিয়ে অনেক সাংবাদিক পরিবার আজ মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে। দেশে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার আজ অনুপসি’ত। প্রতিদিন অনেককে গুম-খুন-মামলা-হামলার শিকার হতে হচ্ছে। তিনি বলেন, প্রতিনিয়ত শোনা যাচ্ছে ব্যাংক ডাকাতির নতুন নতুন তথ্য। আজ সন্দেহ হচ্ছে দেশ আছে কিনা। তিনি আরো বলেন, এই সরকারের আমলে ২৭ জন সাংবাদিক খুন হয়েছে, এখন পর্যন্ত একটা খুনেরও বিচার হয়নি। অবিলম্বে সকল সাংবাদিক হত্যার বিচার দাবি করছি।
বিএফইউজে মহাসচিব এম আবদুলৱাহ বলেন, অবিলম্বে শওকত মাহমুদ ও মাহমুদুর রহমানকে মুক্তি দিতে হবে। মাহফুজ আনাম ও এ এম এম বাহাউদ্দীনসহ সকল সম্পাদক ও সাংবাদিকদের বির্বদ্ধে হয়রানিমূলক মামলা রয়েছে তা প্রত্যাহার করতে হবে। বন্ধ সব মিডিয়া খুলে দিতে হবে। একইসঙ্গে সাগর-র্বনীসহ সব সাংবাদিকের খুনীদের বিচার এবং নবম ওয়েজবোর্ড গঠন করে সাংবাদিকদের আর্থিক নিরাপ্তা নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, সাংবাদিকদের দাবি আদায়ে দীর্ঘদিন যাবৎ আন্দোলন চলছে এবং যতদিন দাবি আদায় না হবে ততদিন আমাদের আন্দোলন চলবে। এ আন্দোলন ঘরে সীমাবদ্ধ থাকবে না। সারা দেশের সাংবাদিক সমাজ ঐক্যবদ্ধ হয়ে বৃহত্তর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবে। চক্রান্তকারিদের উদ্দেশ্যে এম আবদুলৱাহ বলেন, এখনও সময় আছে চক্রান্ত বন্ধ করে সত্যের পথে, ন্যায়ের পথে আসুন। তা নাহলে সাংবাদিক সমাজের কাছে আরও ধিকৃত হবেন।
এমএ আজিজ বলেন, আজ অনেক সাংবাদিক বেকার। অনেকেই সঠিক বেতন কাঠামো পাচ্ছে না। সাংবাদিকদের অধিকার বাস্তবায়নে যৌথ আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই। একমাত্র যৌথভাবে আন্দোলন করলেই সাংবাদিকদের অধিকার বাস্তবায়ন করা সম্ভব।
সভাপতির বক্তব্যে কবি আবদুল হাই শিকদার বলেন, সংহতি থাকলে কোনো অন্যায় আমদের সামনে টিকতে পারবে না। যারা আমাদের বির্বদ্ধে চক্রান্ত করছে সেইসব বেঈমান, মীরজাফর, বিশ্বাসঘাতকরা কোনো দিন মাথা উঁচু করে দাড়াতে পারবে না। এসময় তিনি অবিলম্বে শওকত মাহমুদ ও মাহমুদুর রহমানকে মুক্তি দেয়ার জোর দাবি জানান।
জাহাঙ্গীল আলম প্রধান বলেন, চক্রান্তকারীদের আচরণ ইউনিয়ন ও সাংবাদিকদের মর্যাদা ভুলন্ঠিত করেছে। সবাই একসঙ্গে সমাবেশে যোগ দিলে এইসব মীরজাফররা পিছু হটতে বাধ্য হবে।
বাকের হোসাইন বলেন, আমরা কাউকে শত্র্ব মনে করিনা। যারা বিপথগামী হয়েছেন, তারা যদি ভুল বুঝতে পেরে সঠিক পথে ফিরেন আমরা একসঙ্গে কাজ করতে কোন সমস্যা নেই। তবে চক্রান্তের পথ পরিহার করতে হবে।
কাল ১১টায় ফের সমাবেশ : বিএফইউজে ও ডিইউজে কার্যালয়ে ধারাবাহিক কর্মসূচীর অংশ হিসেবে কাল বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় সাংবাদিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সকলকে এতে অংশগ্রহণের আহবান জানিয়েছেন সাংবাদিক নেতারা। খবর প্রেস বিজ্ঞপ্তির