| রাত ১:২০ - বৃহস্পতিবার - ৩০শে নভেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ - ১৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ - ১৫ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

ময়মনসিংহ বিভাগীয় কার্যালয়ের স্থান নির্বাচনে সৈয়দ আশরাফসহ সচিব বহর আসছেন শুক্রবার

স্টাফ রিপোর্টার, ১০ মার্চ ২০১৬, বৃহস্পতিবার,
নবগঠিত ময়মনসিংহ বিভাগ গঠনের পাঁচ মাস অতিক্রান্ত হলেও বিভাগীয় কমিশনার ছাড়া এখন পর্যন্ত আর কোনো বিভাগীয় কর্মকর্তা যোগদান করেননি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বহুল প্রত্যাশিত দেশের অষ্টম বিভাগ ময়মনসিংহের প্রতি অত্যন্ত আন্তরিক। তাই ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার ও অন্যান্য বিভাগীয় কার্যালয়ের জন্য একটি উপযুক্ত স’ান নির্বাচনের জন্য সরজমিনে পরিদর্শনে শুক্রবার দুপুরে ময়মনসিংহে আসছেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এমপিসহ প্রশাসনের সর্বোচ্চ কর্মকর্তাদের একটি টীম। বিকেল ৩টায় শম্ভুগঞ্জসহ আরো কয়েকটি স’ান সরজমিনে দেখে চূড়ান্ত করা হবে বলে । এরপর জমি অধিগ্রহন সম্পন্ন করে দ্র্বত অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে প্রশাসন সূত্র জানায়।
ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মুস্তাকীম বিলৱাহ ফার্বকী জানান, রাজধানী ঢাকা থেকে হ্যালিকপ্টার যোগে শুক্রবার দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে ময়মনসিংহে এসে পৌছনে জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। এসময় তার সফরসঙ্গী হবেন পাট ও বস্ত্র প্রতিমন্ত্রী মীর্জা আজম এমপি, মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও ময়মনসিংহের সাবেক জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আলম, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মূখ্যসচিব আবুল কালাম আজাদ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. কামাল আবুল নাসের চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সুরায়িা বেগম, ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব মেজবাউল আলম, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মঈন উদ্দীন আব্দুলৱাহ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সুবীর কিশোর চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-১ সাজ্জাদুল হাসান, ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার ও ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ জিলৱার রহমান, গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মোঃ হাফিজুর রহমান মুন্সী, স’াপত্য অধিদপ্তরের প্রধান স’পতি কাজী গোলাম নাসিরসহ সংশিৱষ্ট বিভাগীয় উধর্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।
বহুল প্রত্যাশিত ময়মনসিংহ বিভাগের গেজেট গত (১৩ অক্টোবর) প্রকাশিত হয়েছে।
উপমহাদেশের অন্যতম বৃহৎ জেলাকে বিভাগ প্রতিষ্ঠার লক্ষে দীর্ঘ ২৬ বছর আন্দোলনের প্রেৰিতে অবশেষে গত ১৪ সেপ্টেম্বর নিকারের বৈঠকে অনুমোদনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা বিভাগ ভেঙ্গে ময়মনসিংহ, জামালপুর, শেরপুর ও নেত্রকোনা এই ৪ জেলা নিয়ে ময়মনসিংহ বিভাগ ঘোষণা করেন। নবগঠিত বিভাগের প্রথম বিভাগীয় কমিশনার জি.এম সালেহ উদ্দিন যোগদান করেন গত বছরের ৩ ডিসেম্বর।
গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর পুলিশ বিভাগের দৰ অফিসার উপ-মহা পুলিশ পরিদর্শক (ডিআইজি) চৌধুরী আব্দুলৱাহ আল মামুনকে পুলিশের নবগঠিত ময়মনসিংহ রেঞ্জের ডিআইজি হিসেবে নিয়োগ দেয়া হলেও তিনি এখন পর্যন্ত কর্মস’লে যোগ দান করেননি। পুলিশের রেঞ্জ ডি.আই.জি যোগদান না করায় বিভাগের প্রশাসনিক কার্যক্রমে সাড়া পাচ্ছে না। আগামী সপ্তাহে চৌধুরী আব্দুলৱাহ আল মামুন যোগদান করবেন বলে জানা গেছে।
ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশার কাযালয়ে গতবছরের ২৮ডিসেম্বর প্রথম অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার হিসেবে নিয়োগ পান পরিবেশ অধিদপ্তর সিলেটের পরিচালক মোঃ সালেহ উদ্দিন চৌধুরী, তিনি যোগদান না করে অন্যত্র বদলী হয়ে যান। ফলে গত ১২ জানুয়ারী অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার হিসেবে নিয়োগ পান নেত্রকোণা জেলার জেলা প্রশাসক (যুগ্ম-সসিচব) ড. তর্বন কান্তি শিকদার। তিনিও যোগদান না করে গত ১২.০২.২০১৬ প্রাথমিক ও গণশিৰা মন্ত্রণালয়ে বদলী হয়ে যান। বর্তমান ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার জি.এম সালেহ উদ্দিন সরকারী কাজে আমেরিকায় গেছেনগত ৫ মার্চ। তিনিদেশে ফিরবেন আগামী ২৩ মার্চ। নব গঠিত এই বিভাগে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার না থাকায় প্রশাসনের কর্মকান্ডে আবারো গতি হারিয়েছে।
ঢাকা বিভাগকে ভেঙে দেশের অষ্টম বিভাগ ময়মনসিংহে এক কোটি ১৪ লাখ ৭০ হাজার ৪৭ জনসংখ্যা এবং এর এই বিভাগের আয়তন ১৩ হাজার ৬৩১.১২ বর্গকিলোমিটার। নবগঠিত ময়মনসিংহ বিভাগের চারটি জেলার মধ্যে রয়েছে মোট ২৪টি আসন, উপজেলা ৩৫টি, থানা ৩৭টি, পৌরসভা ২৬টি, ইউনিয়ন ৩৫২টি, এবং গ্রাম ৭ হাজার ৩০টি। জনসংখ্যার ঘনত্ব: ১০১০ জন প্রতিবর্গ কি:মি:। আয়তনে সবচেয়ে বড় জেলা: ময়মনসিংহ (৪,৩৯৪.৫৭ বর্গ কি:মি:) এবং আয়তনে সবচেয়ে ছোট জেলা: শেরপুর (১,৩৬৪.৬৭ বর্গ কি:মি:)।
ময়মনসিংহ, জামালপুর, শেরপুর ও নেত্রকোণার সঙ্গে টাঙ্গাইল ও কিশোরগঞ্জ জেলা রেখে ময়মনসিংহ বিভাগ গঠনের প্রস্তাবে গত ২৬ জানুয়ায়ী, ২০১৫ নীতিগত অনুমোদন দিয়েছিল মন্ত্রিসভা। তবে চূড়ান্ত অনুমোদনে টাঙ্গাইল ও কিশোরগঞ্জ জেলাকে ঢাকার সঙ্গেই রাখা হয়। ময়মনসিংহ বিভাগ হওয়ার আগ পর্যন্ত ঢাকা বিভাগে জেলা ছিল ১৭টি। নতুন বিভাগ হওয়ায় এখন ১৩ জেলা নিয়ে ঢাকা বিভাগ।
ময়মনসিংহ জেলার প্রতিষ্ঠা লাভ করে ১৭৮৭ খ্রিস্টাব্দের ১লা মে। ১৯৮৪ খ্রিস্টাব্দে সকল মহকুমা জেলায় উন্নীত করার সরকারি সিদ্ধান্ত গৃহীত হওয়ার ফলে বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলার ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, জামালপুর, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা ও শেরপুর সকল মহকুমাই জেলায় উন্নীত হয়।
এদিকে বিভাগ বাস্তবায়নের দাবীতে নেতৃত্বদানকারী সংগঠন এবং বিগত ২৬ বছর ধরে আন্দোলনরত ময়মনসিংহ জেলা নাগরিক আন্দালন ও উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদ। জেলা নাগরিক আন্দালনের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার নূর্বল আমীন কালাম জানান নবগঠিত ময়মনসিংহ বিভাগ অনুমোদনের গেজেট প্রকাশ হওয়ায় আগামী ১৮ অক্টোবর রবিবার বেলা ১১টায় ময়মনসিংহ শহরের টাউন হল চত্বর থেকে
ময়মনসিংহে বিশাল বিজয় ও আনন্দ র‌্যালী বের করা হবে । এতে বিভাগ আন্দোলনে যারা বিশেষ অবদান রেখেছেন তারাসহ ৪ জেলার বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গসহ সর্বস্তরের প্রতিনিধিবৃন্দ অংশগ্রহন করবেন।

ময়মনসিংহ পৌরসভার মেয়র ও জেলা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি ইকরামূল হক টিটু বিভাগ বাস্তবান করায় এবং গেজেট প্রকাশ হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ময়মনসিংহ পৌরবাসীর পৰ থেকে আন্তরিক অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জানিয়ে দ্র্বত বিভাগের কার্যক্রম শুর্ব করার আহবান জানান। এই সাথে দ্র্বত ময়মনসিংহকে সিটি কর্পোরেশন, শিৰাবোর্ড, ময়মনসিংহে অর্থনৈতিক জোন, ইমিগ্রিশনসহ হালুয়াঘাটে পূর্ণাঙ্গ স’লবন্দর স’াপনসহ এ অঞ্চলের গণদাবীগুলো পূরণ করার জন্যে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অনুরোধ জানান।
ময়মনসিংহ জেলা নাগরিক আন্দোলনের সভাপতি অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান খান বলেন দীর্ঘ ২৬ বছর যাবত ধারাবাহিকভাবে বিভাগ আন্দোলন চলছে। তিনি বলেন, বিভাগ বাস্তবায়নের দাবীতে নিয়মতান্ত্রিকভাবে, সভা, সমাবেশ, মানববন্ধন, সংবাদ সম্মেলন, গণসংযোগ, লিফলেট ও পোস্টার বিতরণ, মাইকিং, গণসাৰর অভিযান, মোটর কার রা্যালী, রিকশা মিছিল, স্মারকলিপিসহ নানা কর্মসূচী পালন করা হয়। #

সর্বশেষ আপডেটঃ ৭:২৯ অপরাহ্ণ | মার্চ ১০, ২০১৬