বাজিতপুরে ২মাস ধরে ৬শত শিক্ষকের বেতন নেই

বাজিতপুর (কিশোরগঞ্জ) সংবাদদাতা ঃ-৭ মার্চ ২০১৬, সোমবার,
কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলা ১০৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় ৬শত শিক্ষক জানুয়ারী মাসের বেতন পাননি। গত ২মাসে তাদের পরিবারের কষ্টের অন্তঃ নেই। অনেকে ঋন করে, এমন কি সুদের উপর টাকা এনে খরচ চালাতে বাধ্য হচ্ছে। উপজেলা শিৰা অফিসার শিক্ষকদের বিল তৈরি করে হিসাব রক্ষণ অফিসে জমা দিয়েছেন অনেক দেরিতে বলে এই জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে বলে অনেক শিক্ষক সাংবাদিকদের নিকট জানিয়েছেন। দূর্ভোগে পড়া শিৰকরা জানান, বেতন বিল তৈরি শিৰা অফিসার গাফিলতি করেছেন। গত বছরের জুলাই মাস থেকে সরকার নতুন বেতন স্কেল কার্যকর করার ঘোষনা দেয়। হত বছরের ৫মাসের বাড়তি বেতনের (এরিয়াবিল) বকেয়া টাকা দু’দফায় পরিশোধ করার কথা থাকলেও আজ পর্যন্ত কোন শিক্ষককে এ টাকা দেওয়া হয়নি। নতুন জাতীয় বেতন স্কেলে সার্ভিস বই উন্নয়নের নামে ও শিক্ষা অফিস ব্যাপক উৎকোচ বানিজ্য করছে বলেও শিক্ষকরা অভিযোগ করেন। এর আগে উন্নীত স্কেলে বেতন নির্ধারণের সময় ও বিভিন্ন জটিলতা দেখিয়ে শিৰা অফিস উৎকোচ নেন। দূর্ভোগের শিকার এক শিৰক জানান, তিনি সুদের উপর কয়েক হাজার টাকা নিয়ে বাসাভাড়া পরিশোধ করেছেন। খাওয়া-দাওয়া ও সংসার খরচ ও এ টাকা থেকেই বহন করা হয়েছে। আরেক নারী শিক্ষক জানান, ২মাস বেতন না পেলে যা হয়, সেই অবস’াই হয়েছে তার। তার মতে, নারী শিক্ষকদের স্বামীরা হয়তো বাড়তি খরচ বহন করেছেন; কিন’ পুর্বষ শিক্ষকদের অবস’া অত্যান্ত সুচনীয়। একাধিক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করা শর্তে জানান, টাকার অভাবে অনেকে খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছেন। এদের মধ্যে কয়েকজন অভিযোগ করে বলেন, নতুন বেতন স্কেলে সার্ভিস বুক লেখার নামে তাদের কাছ থেকে টাকা আদায় করছেন। এই উৎকোজের টাকার পরিমান ২০০ থেকে ৫০০ টাকা হয়ে হাজার টাকা। তারা আরো জানান, নতুন স্কেলে তাদের গত বছরের ৫মাসের বেতন ও এখনো দেওয়া হয়নি। খোজ নিয়ে জানা যায়, প্রতি মাসের ২৫ তারিখের মধ্যেই পরবর্তী মাসের বেতন বিল তৈরি করে শিৰা অফিস হিসাব রৰণ অফিসে জমা দেওয়া হয়। নতুন বেতন নির্ধারণের অজু হাতে জানুয়ারী মাস পার হয়ে ফের্ব্রয়ারী মাস চলে গেছে ঠিকই এখনো পর্যন্ত বিল তাদের দেওয়া হয়নি। এ অবস’ায় ২ মাস পেরিয়ে গেলেও তৃতীয় মাসের বেতন না পাওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। সাধারণ শিৰকদের অভিযোগ উন্নীত বেতন স্কেল নির্ধারণ ও জাতীয় স্কেল নির্ধারণ করেতে গিয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিস কর্তৃপৰ অন্তত লক্ষ লক্ষ টাকার উৎকোজ বানিজ্য করেছে। এছাড়া অন লাইনে জাতীয় বেতন স্কেল নির্ধারণের জন্য হিসাব রক্ষন অফিসে দেওয়া অর্ধশত সার্ভিস বইক্ এখনো আটক পড়ে আছে। প্রসঙ্গত, উপজেলা ১০৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বেতন ভাতা মিলিয়ে মোট ৬৫ লৰ টাকা উত্তোলন করেন। উপজেলা হিসাব রক্ষন অফিসার তাপস কুমার সরকার বলেন, শিক্ষা অফিসার বিল জমা না দিলে আমরা কি ভাবে বেতন দেব? তিনিই (শিক্ষা অফিসার) এ বিষয়ে ভালো বলতে পারবেন। শিক্ষা অফিসার শফিকুল ইসলাম খান জানান, শিক্ষকরাই পুরাতন স্কেলে বেতন নিতে চাননি। নতুন স্কেলে বেতন চেয়েছেন। তাদের বেতন ফিক্সেশন হয়ে আসেনি বলেই বেতন পাননি। এৰেত্রে শিক্ষা অফিসের কোন গাফিলতি নেই। হিসাব রক্ষন অফিসে অনলাইনে কাজ করতে গিয়ে দেরি হচ্ছে। পুরাতন স্কেলে বেতন নিলে এ অবস’ার সৃষ্টি হতো না। উৎকোচ বাণিজ্যের অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, কে জানে, আমিতো এমন কিছু জানিনা”! ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি ফের বলেন, উৎকোচের ব্যাপার থাকলে তো তাদের বই আটকই থাকতো। আমি তো কোন বই (সার্ভিস বুক) আটকে রাখিনি।