শেরপুরের পল্লীতে সেচযন্ত্রের মালিক খুন : আটক-১

শেরপুর প্রতিনিধি: ৪ মার্চ ২০১৬, শুক্রবার,
শেরপুরের সদর উপজেলার চরশেরপুর ইউনিয়নের হেরুয়া বালুঘাট গ্রামে উসমান আলী খান (২৩) নামে সেচ যন্ত্রের এক মালিক খুন হয়েছেন। আজ ৪ মার্চ শুক্রবার সকালে সদর থানা পুলিশ উসমানের জবাই করা লাশ তাঁর সেচ যন্ত্রের ঘর থেকে উদ্ধার করেছে। নিহত উসমান হের্বয়া বালুঘাট গ্রামের মৃত আব্দুল জব্বার ওরফে আহালুর ছেলে। বোরো খেতে পানি দেওয়া ও পারিবারিক দ্বন্দ্বের জের ধরে উসমান খুন হয়েছেন বলে পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে পুলিশ আলতাফ হোসেন (৩৭) নামে একজনকে আটক করেছে।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন যাবত উসমান দুটি সেচ যন্ত্র (অগভীর নলকুপ) কিনে হের্বয়া বালুঘাট গ্রামের বিভিন্ন বোরো খেতে পানি সরবরাহের ব্যবসা করতেন। যন্ত্র দুটির নিরাপত্তার স্বার্থে তিনি সেচ যন্ত্র ঘরেই ঘুমাতেন। আজ শুক্রবার ভোর রাতে সেচ যন্ত্রের ঘর থেকে গোঙানির আওয়াজ পেয়ে উসমানের ভগ্নিপতি দুলাল হোসেন কালাম (৩৮) দ্র্বত ওই ঘরে যান এবং সেখানে গিয়ে গলায় জবাই করা অবস্থায় উসমানকে মাটিতে পড়ে থাকতে দেখেন। এ সময় তাঁর (দুলাল) ডাক-চিৎকারে আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীরা ঘটনাস’লে আসেন এবং উসমানকে মৃত অবস্থায় পান।
সংবাদ পেয়ে সদর থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. সজীব খানের নেতৃত্বে পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস’লে গিয়ে আজ শুক্রবার সকাল সাতটায় উসমানের জবাই করা লাশ ও রক্তমাখা মশারি ও অন্যান্য কাপড় উদ্ধার করেন।
সদর থানায় অবস্থানরত নিহত উসমানের ভগ্নিপতি দুলাল হোসেন কালাম আজ শুক্রবার বলেন, উসমানের আপন ফুফাত ভাই সৈয়দ জামালের সঙ্গে প্রতিবেশী আব্দুর রহমান ওরফে কালার মধ্যে জমি ও পারিবারিক সংক্রান্ত বিরোধ ও মামলা-মোকদ্দমা চলে আসছিল। কয়েক দিন যাবত আব্দুর রহমান সৈয়দ জামালের বোরো ধান খেতে পানি না দেওয়ার জন্য উসমানকে চাপ দিয়ে আসছিলেন। কিন’ উসমান তাঁর (আব্দুর রহমান) কথা শোনেননি। এর জের ধরে দুর্বৃত্তরা উসমানকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
ভগ্নিপতি দুলাল আরও বলেন, তাঁর শ্যালক উসমান অবিবাহিত ছিলেন এবং চাকরি নিয়ে মালয়েশিয়ায় যাওয়ার জন্য প্রস’তি নিচ্ছিলেন। এজন্য মালয়েশিয়া দূতাবাসে ভিসার আবেদনও করেছিলেন। কিন’ নির্মম হত্যার ঘটনায় তাঁর সে স্বপ্ন ভেঙ্গে গেল। পুত্র শোকে তাঁর (উসমান) মা রোকেয়া বেগম প্রায় বাকর্বদ্ধ হয়ে পড়েছেন বলে তিনি জানান।
শেরপুর সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. সজীব খান বলেন, এ ঘটনায় সদর থানায় হত্যা মামলা দায়েরের প্রস’তি চলছে। সুরতহাল প্রতিবেদন অনুযায়ী উসমানকে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে জবাই করে হত্যা করা হয়েছে। নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য শেরপুর জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে পুলিশ একজনকে আটক করেছে।