| রাত ১২:২১ - শুক্রবার - ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ - ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - ১৬ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

পৌর নির্বাচন মুক্তাগাছায় প্রার্থীদের ঘুম হারাম গৌরব পুনরুদ্ধারে মরিয়া জাপা

সিরাজুল হক সরকার: মুক্তাগাছা থেকে, ২১ ডিসেম্বর ২০১৫, সোমবার,
দেশের প্রাচীনতম পৌরসভা ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা ঘুম হারাম করে প্রচারণায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। ভোট প্রার্থনায় কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে ঘুরছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। পোস্টারে পোস্টারে ছেয়ে গেছে পুরো শহর সমানতালে চলছে মাইকিং। মেয়র পদে আওয়ামীলীগে বিদ্রোহী ভেজাল, প্রচারে নিরব বিএনপি, গৌরব পুনরুদ্ধারে মরিয়া জাপা।
প্রায় দেড়শ বছরের পুরাতন মুক্তাগাছা পৌরসভায় মোট ভোটার ৩৩ হাজার ৭৫৫ জন। মেয়র পদে আওয়ামীলীগ থেকে বর্তমান মেয়র আব্দুল হাই আকন্দ (নৌকা), বিএনপি থেকে শহীদুল ইসলাম শহীদ (ধানের শীষ), জাতীয় পার্টি থেকে সাবেক পৌর মেয়র মরহুম তালেব আলীর পুত্র আতাউর রহমান লেলিন (লাঙ্গল), জাসদ থেকে শরিফুল ইসলাম বিল্পব (মশাল) এবং আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক দেবাশীষ ঘোষ বাপ্পী (নারিকেল গাছ) প্রতীক নিয়ে মাঠে লড়ছেন। দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীর ভেজাল নিয়ে অনেকটাই বেকায়দায় পড়েছে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী আঃ হাই আকন্দ। তাছাড়া বারবার কোন্দলে জর্জরিত আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা উপরের চাপে গা বাঁচাতে ঐক্যবদ্ধ দেখিয়ে নৌকা প্রতীক নিয়ে মাঠে নামলেও ভেতরে ভেতরে নৌকা ডুবিয়ে ব্যক্তি আক্রোশ মেটানোর আশংকা রয়েই গেছে। সব মিলিয়ে মাঝপথে নৌকা এখন শঙ্কার মধ্যে দুদোল্যমান। নিষ্প্রভ প্রার্থী, দলীয় কোন্দল, মামলা-হামলার ভয় নিয়ে অনেকটাই নিভৃতে নীরবে হাটছেন বিএনপির মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী শহীদুল ইসলাম শহীদ। তার সাথে বিএনপির উল্লেখযোগ্য কোন নেতাকর্মীর সক্রিয় দেখা মিলছে না প্রকাশ্যে। জাতীয় রাজনীতির ইস্যুতে বিএনপি নিরব ভোটাররাই তার ভরসা। সাবেক স্পীকার মরহুম শামছুল হুদা চৌধুরীর নেতৃত্বে একদা রমরমা থাকা জাতীয় পার্টি দীর্ঘদিন পর দলীয় এমপি পেয়ে এখন অনেকটাই সংঘটিত। জমিদার ঐতিহ্যের পৌর পিতার আসনটি দখলে তারা শুরম্ন থেকেই এগোচ্ছেন সুপরিকল্পিত পথে। ক্লিন ইমেজের উচ্চ শিক্ষিত প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয়ার মধ্য দিয়ে চমকের মাধ্যমেই শুরম্ন করেছেন তাদের নির্বাচন। লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী আতাউর রহমান লেলিনের বাবা তৎকালীন জাতীয় পার্টির নেতা মরহুম তালেব আলী জনপ্রিয়তার বদৌলতে একাধিকবার পৌর পিতার আসনে আসীন ছিলেন। বর্তমান এমপি সালাহউদ্দিন আহমেদ মুক্তির আশির্বাদের পাশাপাশি লেলিনের ভগ্নিপতি বিএনপির সাবেক এমপি আবু রেজা ফজলুল হক বাবলু রয়েছেন তার সাথে। সবাইকে ছাপিয়ে প্রচারণায় অনেক দূর এগিয়ে আছেন তিনি। দলের পক্ষে মেয়রের চেয়ারটি পুনরম্নদ্ধারে ঐক্যবদ্ধভাবে সর্বশক্তি প্রয়োগ করে মরিয়া হয়ে মাঠে নেমেছে জাতীয় পার্টির সকল সত্মরের নেতাকর্মীরা। লাঙ্গল প্রতীক হাতে নিয়ে ঘরে ঘরে ভোট প্রার্থনা করছে জাপার বিপুল সংখ্যক নারী কর্মী। সব মিলিয়ে চমক সৃষ্টি করে শেষ হাসি হাসতে পারে জাপা। স্বল্প সংখ্যক কর্মী সমর্থক নিয়ে মাঠে ঘুরছেন জাসদ প্রার্থী শরিফুল ইসলাম বিপ্লব ও নারিকেল গাছ প্রতীক পাওয়া আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী দেবাশীষ ঘোষ বাপ্পী। শেষ পর্যন্ত বর্তমান অবস্থা বহাল থাকলে ধানের শীষের সাথে লাঙ্গলের হাড্ডা হাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। সব কূল বজায় থাকলে এবং জাপার প্রচারণা ধরে রাখতে পারলে জাপা শেষ হাসি হেসে বড় ধরনের চমক দেখাতে পারে বলে রাজনৈতিক সচেতন মহল মনে করেন।

সর্বশেষ আপডেটঃ ৮:৩৯ অপরাহ্ণ | ডিসেম্বর ২১, ২০১৫