দেশে অশুভবুদ্ধির জয় চলছে : দীপনের বাবা

অনলাইন ডেস্ক, ২ নভেম্বর ২০১৫, সোমবার,
দেশে অশুভবুদ্ধির জয় চলছে বলে মন্তব্য করেছেন জাগৃতির প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপনের বাবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে অশুভবুদ্ধির জয় চলছে। শুভবুদ্ধি নিয়ে সাধারণ মানুষ চলতে চায়। তারা বিড়ম্বিত হয়, অপমানিত হয়, অসহায় বোধ করে।’
আজ সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর শাহবাগের আজিজ মার্কেটের সামনে প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপনকে হত্যা এবং তিন লেখক-প্রকাশককে হত্যাচেষ্টার প্রতিবাদে লেখক-শিল্পীরা নিজেদের বই পুড়িয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন। সেখানে অধ্যাপক আবুল কাসেম এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা কোনো বিচার চাই না, শুভবুদ্ধির উদয় হোক’—স্লোগানকে সামনে রেখে ‘কবি-লেখক-শিল্পী সমাবেশ’ ব্যানারে এই সমাবেশ হয়। গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্মকে প্রতারণার উদ্দেশ্যে ব্যবহার করলে সেটা দিয়ে শুভকর কিছু হবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেন, ‘শুভবুদ্ধির জাগরণ দরকার, এতে রাজনীতি, শিক্ষা, সাহিত্য সুস্থ হবে, মহৎপ্রাণ জ্ঞানী মানুষের আত্মপ্রকাশ ঘটবে। তার মাধ্যমে আমাদের দেশ উন্নত হবে। প্রত্যেকটা মানুষের মধ্যে শুভবুদ্ধি-অশুভবুদ্ধি কাজ করে। কিন্তু শুভবুদ্ধি স্বতঃস্ফূর্তভাবে জয়ী হয় না, এর জন্য সচেতন প্রয়াস দরকার হয়। এই প্রয়াস হতে পারে ব্যক্তিগত, হতে পারে সংগঠিত।
বিভিন্ন সংবাদপত্রে ফয়সলকে ব্লগার হিসেবে উপস্থাপন করা হচ্ছে উল্লেখ করে দীপনের বাবা বলেন, ‘ইন্টারনেট সম্পর্কে দীপনের গভীর ধারণা ছিল। কিন্তু ব্লগার ছিল না। সেখানে ঢোকেনি। ব্লগে দুটি পক্ষ দেখা যায়, একটি ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে কথা বলে। যার অধিকাংশই ভুল, মিথ্যা। আর যারা ধর্মের পক্ষে লিখে সেগুলোও মিথ্যা, বিভ্রান্তিকর। এই অবস্থায় দীপন কোনো পক্ষে, নিজের অন্তর থেকে প্রবেশ করতে পারিনি। সেই দীপনকে ব্লগার বলে অভিহিত করা সম্পূর্ণ ভুল ও অন্যায়।’
লোক পত্রিকার সম্পাদক শামীমুল হকের পরিচালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন লেখক ও সম্পাদক আহমদ মাজহার, কবি জাহিদ হায়দার, লেখক রাখাল রাহা, কবি চঞ্চল আশরাফ, আহমেদ স্বপন মাহমুদ, মুজিব মেহেদী, কামরুজ্জামান কামু, গায়ক মাহমুদুজ্জামান বাবু, শিল্পী অরূপ রাহী, প্রাবন্ধিক ফিরোজ আহমেদ, ফারুক ওয়াসিফ প্রমুখ।
এ সময় আগামী শুক্রবার শাহবাগে সব লেখক-প্রকাশকের অংশগ্রহণে প্রতিবাদ সমাবেশের আহ্বান জানানো হয়। সমাবেশে এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে বাংলা একাডেমি পুরস্কারসহ বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখকদের এই অন্যায়ের প্রতিবাদ হিসেবে তাঁদের পুরস্কার বর্জন করার আহ্বান জানানো হয়। সমাবেশ শেষে লেখক-কবি-প্রকাশক সাহিত্যিকেরা নিজেদের বইয়ে আগুন ধরিয়ে দেন। তাঁরা সুবিধাবাদী লেখকদের সামাজিকভাবে প্রত্যাখ্যান করার আহ্বান জানান। শতাধিক তরুণ শিল্পী-কবি ও লেখক সমাবেশে অংশ নেন।