| ভোর ৫:৫৫ - বৃহস্পতিবার - ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ - ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - ১৫ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

গফরগাঁওয়ে দুই দিনে গ্রাহকদের ১৫ লাখ টাকা নিয়ে লাপাত্তা পল্লী প্রগতি সমিতি

আজহারুল হক, গফরগাঁও১২ সেপ্টেম্বর ২০১৫, শনিবারঃ  ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে ২শতাধিক গ্রাহকের কাছ থেকে সহজ কিস্তিতে ও বিনা সুদে ঋণ দেয়ার লোভ দেখিয়ে পল্লী মঙ্গল সমিতি ১৫ লাখ টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছে। ঘটনাটি ঘটে উপজেলার পাইথল ইউনিয়নের গয়েশপুর বাজারে। অনেক দরিদ্র মানুষ এদের প্রতারণার শিকার হয়ে আজ দিশেহারা। এছাড়াও প্রতারকদের খপ্পড়ে পড়ে ভাঙ্গনের মুখে অনেক প্রবাসীর সংসার।
জানা যায়, গত ৬ সেপ্টেম্বর রোববার বিকেলে উপজেলার গয়েশপুর বাজারের ফয়েজ এলাহীর নিকট থেকে ৫ কক্ষের একটি ঘর ভাড়া নিয়ে শেখ হাবিবুর রহমান ৮ প্রতারকের সহযোগিতায় পলস্নী প্রগতি সমিতির আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের কার্যক্রম শুরম্ন করে। পরে ৭ সেপ্টেম্বর সোমবার ও ৮ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার পল্লী প্রগতি সমিতির ম্যানেজার হাবিুর রহমান তার সহযোগী রাসেল মিয়া ও আরো ৬ জনকে সাথে নিয়ে সহজ কিসিত্মতে ও বিনা সুদে ঋণ দেয়ার লোভ দেখান। এ সময় প্রতারক হাবিবুর রহমান নিজেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের বংশধর হিসেবে পরিচয় দিয়ে বাড়ি গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়ায় বলে জানান। পরে গয়েশপুর এলাকায় ঘুরে দুই দিনে হাবিবুর রহমানসহ ৮ প্রতারক ২শতাধিক গ্রাহকের কাছ থেকে নগদ ১৫ লাখ টাকা নিয়ে গত ৮ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার রাতের অন্ধকারে পালিয়ে যায়। অভিযোগ উঠেছে প্রতারকদের পালাতে সহযোগিতা করেছেন বাড়ি মালিক ফয়েজ এলাহী।
গয়েশপুর গ্রামের রবিউল আলমের স্ত্রী রীমা আক্তার জানান, তিনি গত ৮সেপ্টেম্বর সকালে দুই লাখ টাকার সুদমুক্ত ঋণের জন্য ২০হাজার টাকা সঞ্চয় দেন। পরদিন সকালে জানতে পারেন ৮সেপ্টেম্বর রাতের অন্ধকারে সমিতির সকল কর্মকর্তাই পালিয়ে গেছেন।
একই গ্রামের ভূমিহীন সুফিয়া খাতুন বলেন, আমার বাড়ি-ঘর না থাকায় অন্যের বাড়িতে থাকি। এ অবস্থায় আমার ভাইয়ের ছেলে আমাকে বাড়ি করার জন্য ২শতাংশ জমি দান করে। ওই জমি সাফ কাবলা করতে ২৫ হাজার টাকা দাদন নেই। পরে সুদ মুক্ত ঋণের কথা শুনে দাদনের ২৫ হাজার টাকা থেকে ১লাখ টাকার ঋন পাওয়ার আশায় পলস্নী মঙ্গল সমিতিতে ১০ হাজার টাকা তুলে দেই।
দুই প্রবাসীর স্ত্রী গয়েশপুর গ্রামের ননদ-ভাবী রীমা ও তানিয়া ৪লাাখ ঋণের আশায় পলস্নী মঙ্গল সমিতির প্রতারক হাতে ৪০ হাজার টাকা তুলে দেন। এ অবস’ায় আজ তাদের সংসারে দেখা দিয়েছে অশান্তি।
এ ব্যাপারে বাড়ির মালিক ফয়েজ এলাহী বলেন, মাসিক ৮হাজার টাকায় আমি পল্লী মঙ্গল সমিতির কাছে ৫কক্ষ ভাড়া দেই। কিন’ আমার বাড়ি ভাড়া পরিশোধ না করে প্রতারক নিন্ম মধ্যবিত্ত ও অতি দরিদ্র লোকদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আফতাব উদ্দিন ঢালী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, সুদ মুক্ত ঋণের কথা শুনে দরিদ্র পরিবারের লোকজন একেবারে হুমড়ি খেয়ে পড়ে। এ অবস্থায় মাত্র দু’দিনেই প্রতারক চক্রটি অনেক মানুষের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। পড়ে গত ৯ সেপ্টেম্বর প্রতারিত গ্রাহকরা ওই সমিতি অফিসের সামনে এসে বিক্ষোভ করে।

সর্বশেষ আপডেটঃ ৮:৪১ অপরাহ্ণ | সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৫