| সকাল ৭:৫৪ - বৃহস্পতিবার - ১৮ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ - ৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - ৮ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

জনতা মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ সাহিদা পারভীনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও জালিয়াতির অভিযোগ

 

ফুলবাড়িয়া ব্যুরো : ০৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, বুধবার,

ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া উপজেলার জনতা মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ সাহিদা পারভীন ও তার স্বামী ভুয়া প্রতিষ্ঠাতা জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অর্থসাৎ, স্বাক্ষর জালিয়াতি ও বিভিন্ন বেআইনি কার্যকলাপের অভিযোগ উঠেছে। যা তদন্ত করার জন্য দুর্নীতি দমন কমিশন, শিৰা মন্ত্রণালয়, শিৰা অধিদপ্তর, জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেছেন কলেজের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও দাতা সদস্য আলহাজ্ব ডা. মো. আব্দুল কুদ্দুছ ও এডহক কমিটির সাবেক সভাপতি এড. মোয়াজ্জেম হোসেন হেলাল।
লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০০২সনে স’ানীয় বিদ্যুৎসাহী ব্যক্তিবর্গের সহযোগিতায় জনতা মহাবিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। ঐ সময় জাকির হোসেন পরিচালনা কমিটির সদস্য ছিলেন। বর্তমান অধ্যৰ সাহিদা পারভীন ২০০৪সন পর্যনৱ নরম্নন্দী কলেজের অধ্যৰ হিসেবে কর্মরত থাকাকালীন হঠাৎ তিনি এ কলেজে অধ্যৰ হিসেবে যোগদান করায় তার স্বামী জাকির হোসেন নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়েন। তাদের কার্যকলাপে অতীষ্ঠ হয়ে ২০১৩সনে কলেজ উদ্যোক্তারা আভ্যনৱরীন অডিট করার সিদ্ধানৱ গৃহিত হয়। অডিট রিপোর্টের সার সংৰেপে বলা হয় মিসেস সাহিদা পারভীন ২০০২ জামালপুর জেলার নরম্নন্দী কলেজের এম.পি.ও ভুক্ত শিৰক হিসাবে চাকুরীজীবি। ২০০৪সনে তিনি জনতা মহাবিদ্যালয়ে অধ্যৰ পদে যোগদান করেন। অডিট রিপোর্টে বলা হয় নিয়োগ প্রদত্ত কাগজপত্রে ২০০২সনে নিয়োগপত্র, যোগদানপত্র এবং নিয়োগের জন্য তথা কথিত বোর্ডের ভুয়া নম্বরপত্র দাখিল করেন। অথচ ৫/১/২০০৩সনে অধ্যৰ পদে ময়মনসিংহের দৈনিক স্বজন পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। অধ্যৰ নিয়োগের জন্য কলেজের কোন রেজুলেশন প্রদর্শন করতে পারেনি। এ ছাড়াও উক্ত অধ্যৰ নিয়োগের জন্য তথাকথিত বোর্ডের তৈরীকৃত প্রার্থীদের তুলনামুলক তথ্য বিবরণীতে ৬টি সীল ও স্বাৰর থাকলেও স্বাৰরকারীদের কোন সীলেই নামাংকন নেই। এসব ৰেত্রে সাধারণত নামাংকন সীল ব্যবহার হয়ে থাকে। তৎকালীন সভাপতি ডা. আব্দুল কুদ্দুছ এবং সদস্য মো. দৌলত আলী এক ঘোষণাপত্রে বলেন আমরা সাহিদা পারভীনের কোন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বাৰর করি নাই। সাহিদা পারভীনের নিয়োগপত্রে আমাদের স্বাৰর জাল করা হয়েছে।
কলেজের অনুমোদন ও স্বীকৃতি বাবদ ৫লাখ ৮৫হাজার টাকা খরচের কোন ভাউচার বা রেজুলেশন কমিটির অনুমোদন নেই।
কলেজ কমিটি অনুমোদন বাবদ ১৩হাজার, উপজেলা পরিষদ থেকে প্রাপ্ত দেড় টন গম বিক্রি, জেলা পরিষদের অনুদান ৫০হাজার টাকা, সরকার প্রদত্ত টিউশন ফি বাবদ ১লাখ ১৬হাজার ৭৪৭টাকা, এছাড়াও ভর্তি ফরম, পরীৰার ফি আদায়, ফরম বিক্রি, সনদপত্র বিতরণ ইত্যাদি বাবদ দীর্ঘ ১২বৎসরের গভর্ণিং বডির কোন অনুমোদন নেই। বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মহিলা কলেজে ২৫হাজার অনুদান দেওয়ার কথা বলে তা আত্নসাৎ করেন। অধ্যৰ সাহিদা পারভীন ময়মনসিংহের বাসায় বসে অফিস সহকারীর মাধ্যমে বিভিন্ন স্বাৰর করেন। প্রতিমাসে তিনি ৫/৭দিন কলেজে উপসি’ত হয়ে হাজিরা খাতায় পুরো মাসের স্বাৰর করেন। অধ্যৰের স্বামী জাকির হোসেন ৩/২/২০০২ তারিখে কলেজের হিসাবে জমাকৃত ১লাখ টাকা তার স্ত্রীর মাধ্যমে নিজেদের যৌথ ব্যাংক হিসাবে স’ানানৱর করেন। দুর্নীতিবাজ সুচতুর জাকির বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান করার নাম করে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে সংশিস্নষ্টদের বেকায়দায় ফেলেই যাচ্ছে। ত্রিশাল-ফুলবাড়ীয়া মৈত্রী কলেজ, আবুল হোসেন উচ্চ বিদ্যালয়, প্রিন্সিপাল পারভীন জাকির কলেজ ফুলবাড়ীয়া- যার কোন সাইনবোডও পাওয়া যায়নি। তবে স’ানীয়রা জানান, ত্রিশাল-ফুলবাড়ীয়া মৈত্রী কলেজ ও প্রিন্সিপাল পারভীন জাকির কলেজ ফুলবাড়ীয়া এই হাফ বিল্ডিংটি দুই নামে পরিচিত, যার জন্য কোন সাইনবোড নাই।
মুক্তাগাছার চেচুয়ায় প্রিন্সিপাল পারভীন জাকির কলেজ, জামালপুরে সাহিদা পারভীনের পিত্রালয়ে আরেকটি কলেজ করে নিজেরা ভুয়া প্রতিষ্ঠাতা সেজে অধ্যৰ জাকির হোসেন কলেজগুলিতে দীর্ঘদিন যাবত নিয়োগ বাণিজ্য করে আসছে। কোন প্রকার ছুটি না নিয়ে কমিটির অনুমোদন বিহীন ৩মাসের অধিক মাতৃত্বকালীন ছুটি ভোগ করে নিজের ৰমতার বহিঃ প্রকাশ ঘটিয়েছেন। কথায় কথায় সাহিদা পারভীন বলেন আমার স্বামীর দ্বারা অনেক কলেজ হয়েছে, আপনারা কয়টা কলেজ করতে পেরেছেন?
এ ব্যাপারে ইতিপূর্বেও অভিযোগ করা হয়েছিল, কিন’ সেই অভিযোগগুলো কখনো তদনেৱ আলোর মুখ দেখেনি। স’ানীয়রা মনে করেন প্রতারক জাকির কি আইনের উর্ধ্বে? বিভিন্ন স’ানে জাকিরের বিশাল সিন্ডিকেট রয়েছে কিন’ তাদেরকে কি সনাক্ত অসম্ভব? গত ২৬আগস্ট দরখাসেৱ স’ানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মো. মোসলেম উদ্দিন এড. তদনৱ পূর্বক আইনানুগ ব্যবস’া গ্রহণের জন্য জোরালো সুপারিশ করেছেন।

সর্বশেষ আপডেটঃ ৮:৩৯ অপরাহ্ণ | সেপ্টেম্বর ০৯, ২০১৫