হালুয়াঘাটে জামাইয়ের ছোটবোনকে ধর্ষনের অভিযোগ শ্বশুর গ্রেফতার
হালুয়াঘাট ব্যুরো: ২৭ আগস্ট ২০১৫, বৃহস্পতিবার:
ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে বড় ভাইয়ের শ্বশুর কর্তৃক ছোটবোনকে ধর্ষনের অভিযোগে শ্বশুরকে আটক করেছে পুলিশ। ঘটনা সুত্রে জানা যায় প্রায় ৫ বছর পূর্বে উপজেলার জুগলী ইউনিয়নের ঘোষবেড় গ্রামের মরজত আলীর কন্যা কবিতা (২২) এর সাথে একই এলাকার মৃত আব্বাছ আলীর পুত্র হুমায়ুনের সাথে ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক রেজিঃ কাবিন মূলে বিবাহ হয়। বিবাহের ৩ মাস পর থেকেই দাম্পত্য জীবনে কলহের সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে শারিরীক নির্যাতনে ২০ দিন হালুয়াঘাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি থাকার পর হালুয়াঘাট থানায় নারী ও শিশু নির্যাতনের একটি মামলা দায়ের করে যা বিজ্ঞ আদালতে বিচারাধীন। দীর্ঘ ৪ বছর পর গত ২৩ আগস্ট আপোষ মীমাংসার মাধ্যমে স্বামী হুমায়ুনসহ তার বাড়ির লোকজন কবিতাকে নেয়ার জন্য প্রস্তাব দেয়। এমন খবর শুনে ২৪ আগস্ট সদর ইউনিয়নের মনিকুড়া গ্রামের কবিতার বড় ভাই সেলিমের শ্বশুর মোঃ বাবুল মিয়া (৪৫) জামাই এর বাড়িতে বেড়াতে যায়। রাত ৮ টায় অভিযুক্ত ধর্ষক মোঃ বাবুল মিয়া কবিতার পিতা-মাতাকে ফুসলিয়ে কবিতাকে তার বাড়িতে নিয়ে গিয়ে ২৫ আগস্ট আদালতের মাধ্যমে স্বামী হুমায়ুন সহ তার বাড়ির লোকজনদেরকে মিলমিশ করে দিবে বলে আশ্বস্থ করেন। এমন প্রস-াবে অসহায় কবিতার পিতা মরজত আলী নিরুপায় হয়ে সরল বিশ্বাসে রাত ৯ টায় তার ছেলের শ্বশুর বাবুল মিয়ার সাথে কবিতাকে দিয়ে দেয়। সরলতার সুযোগ নিয়ে কবিতাকে তার নিজ বাড়িতে যাওয়ার পথে পাশে নির্জন জায়গায় নিয়ে যায় এবং কু-প্রস্তাব দেয়। প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় জোরপূর্বক ধর্ষন ও মারপিট করে বলে অভিযোগ করেন কবিতা। কবিতা বলেন, এসময় সে ডাক চিৎকার দিতে চাইলে অভিযুক্ত বাবুল মিয়া কবিতার মুখ চেপে ধরে এবং রাতভর ধর্ষন করে। পরে ভোরে কবিতাকে নিয়ে বাবুল মিয়া নিজ বাড়িতে যায়। কবিতাকে দেখে বাবুল মিয়ার স্ত্রী সন্দেহ পোষন করে কবিতার সাথে অসামাজিক কোন কাজকর্ম করেছে কি না এ বিষয়ে জানতে চাইলে চোখের পানি ছেড়ে কবিতা সব বলে দেয়। এই নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া বিবাদের সৃষ্টি হয়। পরে বাবুল মিয়ার স্ত্রী কবিতার পিতা-মাতাকে মোবাইল ফোনে খবর দিলে তারা বাবুল মিয়ার বাড়িতে চলে আসে এবং বিকেলে মরজত আলী তার মেয়েকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার পর তার পিতা-মাতাকে উক্ত ঘটনার বর্ননা দেয় কবিতা। এ ব্যাপারে মানবাধিকার সংস্থা “আমাদের আইন” হালুয়াঘাট উপজেলা কমিটির নির্বাহী পরিচালক মোঃ আব্দুল হক লিটনকে মোবাইল ফোনে অবগত করে সহযোগিতা চাইলেন কবিতার পিতা মরজত আলী। পরে ঘটনাস’লে পৌছে মানবাধিকার কর্মীরা কবিতার জবানবন্দি ভিডিও রেকর্ড করেন এবং অভিযুক্তকে থানায় যাওয়ার জন্য পরামর্শ দেন। থানায় যাওয়ার পর অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) ঘটনাটি শুনে তাৎক্ষনিক এস.আই মজিবর কে মামলা নিতে বলেন এবং অভিযুক্ত ধর্ষক বাবুল হোসেনকে গ্রেফতার করতে বলেন। এস.আই মজিবর রহমান রাত অনুমান ২ টায় বাবুল হোসেনকে তার নিজ বাড়ি থেকে আটক করতে সক্ষম হয়। ২৬ আগস্ট ধর্ষনের অভিযোগে বাবুল হোসেনকে কোর্টে সৌপর্দ করা হয়। এমন অস্বাভাবিক ঘটনা এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চলের সৃষ্টি করেছে।