ক্লাসরুম থেকে মুঠোফোন জব্দের জের ৩ শিক্ষার্থীকে মারধর, প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের ক্লাস বর্জন, ঘেরাও, থা্নায় অভিযোগ
আজহারুল হক, গফরগাঁও ঃ ১০ আগস্ট ২০১৫, সোমবার:
ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে শ্রেণী কক্ষে মুঠোফোন ব্যবহার করায় খায়রুল্লাহ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণীর ৫ শিক্ষার্থীর স্মার্ট ফোন জব্দ করে শ্রেণী শিক্ষক। মেয়ের মুঠোফোন জব্দ করার ক্ষোভে আজ মঙ্গলবার সকালে ১০ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী আনিকা তাবাসুমের মা বিদ্যালয়ে প্রবেশ করে ৩ শিক্ষার্থীকে মারধর করে। এর আগে ওই শিক্ষার্থীর বড় ভাই মেহেদি হাসান আকাশ বিদ্যালয়ে গিয়ে মুঠোফোন জব্দ করা শিক্ষককে মারতে উদ্যত হলে প্রধান শিক্ষকসহ অন্য শিক্ষকরা এগিয়ে এলে তাদেরকেও গালিগালাজ করে। এর প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে প্রধান শিক্ষকের কক্ষ ঘেরাও বিচার দাবী করে। খবর পেয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিদ্যালয়ে পৌছে বিচারের আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা শানত্ম হয়। এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামছুন নাহার মাকসুদা বাদী হয়ে মামলা দায়েরের প্রস’তি চলছে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত সোমবার ইংরেজী প্রথমপত্র ক্লাস চলাকালে মুঠোফোন ব্যবহার করার অপরাধে শ্রেণী শিক্ষক মাহমুদুর রহমান ১০ শ্রেণীর ৫শিক্ষার্থীর স্মার্ট ফোন জব্দ করে। পরে ১০ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী আনিকা তাবাসুমের বড় ভাই মেহেদি হাসান আকাশ মুঠোফোন জব্দের ঘটনা শুনে উত্তেজিত হয়ে বিদ্যালয়ে প্রবেশ করে শিক্ষক মাহমুদুর রহমানকে মারতে উদ্যত হয়। এ সময় প্রধান শিক্ষকসহ অন্য শিক্ষকরা এগিয়ে এলে তাদেরকেও গালিগালাজ করে ওই শিক্ষার্থীর বড় ভাই। শিক্ষকদের গালি গালাজ করার ঘটনায় গতকাল মঙ্গলবার সকালে কয়েকজন শিক্ষার্থী বিক্ষোভ প্রদর্শন করলে ১০ শ্রেণীর শিক্ষার্থী আনিকা তাবাসুমের মা বিদ্যালয়ে প্রবেশ করে বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীদের উপর চড়াও হয়ে মারধর করতে থাকে। এতে ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ওয়াহিদা আক্তার, ৭ম শ্রেণীর সানজিদা আক্তার স্বর্ণা ও ৯ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী রিপাতুজ জাহান দীপ্তি আহত হয়। এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের প্রায় ৯শতাধিক শিক্ষার্থী তাৎক্ষনিক ক্লাস বর্জণ করে দায়ীদের বিচার দাবীতে প্রধান শিক্ষকের কক্ষ ঘেরাও করে। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিদ্ধার্থ শংকর কুন্ডু বিদ্যালয়ে উপসি’ত হয়ে দায়ীদের বিচারের আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা শানত্ম হয়।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সামছুন নাহার মাকসুদা বলেন, মোবাইল ফোনের অপব্যবহার প্রতিরোধে ৫ছাত্রীর মোবাইল জব্দ করা হয়। পরে এক শিক্ষার্থীর বড় ভাই ও তার মা বিদ্যালয়ে এসে শিক্ষকদের গালিগালাজ করে ৩ শিক্ষার্থীকে মারধর করে। এ ঘটনায় মেহেদি হাসান আকাশকে আসামী করে মামলা দায়েরের জন্য থানায় অভিযোগ দেয়া হয়েছে।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিদ্ধার্থ শংকর কুন্ডু বলেন, এ ঘটনায় আইনগত প্রক্রিয়া হিসাবে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে বাদি হয়ে মামলা দায়ের করার নির্র্দেশ দেয়া হয়েছে।
গফরগাঁও থানার ওসি আবু ওবায়দা খান বলেন, বখাটে মেহেদি হাসান আকাশকে না পেয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার বাবা আশিকুর রহমান ওরফে আশিক ভেন্ডারকে আটক করা হয়েছে।