| সন্ধ্যা ৬:৩৫ - বৃহস্পতিবার - ২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ - ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ - ১৭ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

ধোবাউড়ায় শামীম হত্যা মামলা, নারকীয় হত্যাকান্ড নিয়ে তোলপাড়

ধোবাউড়া প্রতিনিধিঃ  ৫ আগস্ট ২০১৫, বুধবার:
ধোবাউড়া উপজেলার গামারীতলা ইউনিয়নের দঃ রানীপুর গ্রামে উদ্ধারকৃত লাশ ঐ গ্রামের সাগরীর ছেলে শামীম(১৮)। এটি একটি লোমহর্ষক হত্যাকান্ড। কোন নরপিশাস ছাড়া এমন হত্যা সম্ভব নয়। গলা, হাতের কবজ্বি ও পেট কেটে তাকে হত্যা করা হয়। আর হত্যা শেষে এসিড জাতীয় পদার্থ দিয়ে মুখ মন্ডল পুড়ে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন ১১ জনকে আসামী করে ধোবাউড়া থানায় নিহতের মা সাগরী বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। এবং ইতোমধ্যে ৫ জন আসামীকে গ্রেফতার করে পুলিশ কোর্টে প্রেরণ করেছেন। গত ২২ জুলাই বুধবার দুপুর ১টায় দক্ষিণ রানীপুর এলাকার জবা হাজীর বাড়ীর উত্তরে বৈদ্যুতিক খুটির কাছে গলা, হাতের কব্জি, আঙ্গুল ও পেট কাটা অবস’ায় একটি মৃতদেহ পরে থাকা অবস’ায় পুলিশ উদ্ধার করে। নিহতের মা সাগরী মেয়ে নাছিমা খাতুনের মাধ্যমে লাশের খবর পেয়ে চট্রগ্রাম থেকে এসে লাশ সনাক্ত করে তারই ছেলে শামীম(১৮)। নিহত শামীমের মায়ের অভিযোগ দক্ষিণ রানীপুর এলাকার শাহীন মিয়া, উজ্জল মিয়া, শরীফ মিয়া, ইকবাল কবীর ওরফে মানিক, ইলিয়াস, তোফায়েল, তোফাজ্জল হোসেন, গামারীতলা এলাকার সুমন চন্দ্র সাহা, শানখলা এলাকার শওকত আলী, দক্ষিণ রানীপুর এলাকার ইদ্রিস আলী পুর্ব শত্রুতার জের ধরে আমার ছেলেকে হত্যা করে। তাই তিনি এদের বিরুদ্ধে ধোবাউড়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন বলে সাংবাদিককে জানিয়েছেন। মামলার এজাহারভুক্ত আসামীরাই শামীমকে হত্যা করে চট্রগ্রাম থেকে কিভাবে জানলেন এমন প্রশ্নের উত্তরে নিহতের মা সাগরী বলেন, গত ১৬ জুন আমার ছেলে শামীম মিয়াকে হত্যা করার জন্য দক্ষিণ রানীপুর এলাকার ইলিয়াস, তোফাজ্জল হোসেন, সুমন চন্দ্র সাহা, শওকত আলী, উজ্জল মিয়া, ইদ্রিস আলীর হুকুমে শাহীন মিয়া, উজ্জল মিয়া, শরীফ মিয়া ও ইকবাল কবীর মানিক রামদা দিয়ে কলসিন্দুর পুর্ব বাজারে শামীম মিয়াকে ধাওয়া করে। এসময় তারা হত্যা করতে ব্যর্থ হওয়ায় সুযোগ বুঝে পরে শামীমকে হত্যা করা হয়। মামলা তুলে নিতে কেউ হুমকি দিচ্ছে কিনা এমন প্রশ্নে নিহতের মা বলেন না কেউ হুমকি দিচ্ছেনা। তবে আরও কিছু বিষয় জানতে চাইলে নিহতের মা কথা বলতে চাননি। এদিকে এই নারকীয় হত্যাকান্ডের বিষয়টি প্রকাশ হওয়ার পর ধোবাউড়া থানা পুলিশ ঘটনার রহস্য উদঘাটনে তৎপর রয়েছে। প্রতিদিনই পুলিশ ঐ এলাকায় অবস’ান করছে। অফিসার ্‌ইনচার্জ এমএ হক নিজে এলাকায় তদনত্ম করে সৌদি প্রবাসী ফিরোজ মিয়ার বাড়িতে হত্যাকান্ডের কিছু আলামত পাওয়া গেছে বলে সাংবাদিককে জানিয়েছেন। আর এ বিষয়ে হত্যা মামলা নিয়ে নতুন একটি রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় হচ্ছে। এ ঘটনার পর পুলিশ এবং এলাকাবাসীর ধারণা ঐ বাড়িতেই শামীমকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। স’ানীয় সূত্রে জানা যায় ফিরোজ মিয়া সৌদি আরবে অবস’ান করেন। প্রায় সময়ই বাড়িতে তার স্ত্রী হাজেরা খাতুন হাজু একা থাকায় এলাকার অনেক প্রভাবশালী মহল ঐ বাড়িতে আসা যাওয়া করেন বলে জানা যায়। ইতিমধ্যে ময়মনসিংহ থেকে একজন সাংবাদিক এলাকায় গিয়ে ঐ বাড়িতে আসা যাওয়া করেন এমন কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে সংবাদ প্রকাশ করেন। এরপর থেকে এলাকায় নতুন করে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। যাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তাদের মধ্যে একজন গামারীতলা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক আনোয়ার হোসেন খান। আনোয়ার হোসেন খানের নাম উল্লেখ করার কারনে এলাকার কিছু ব্যাক্তি মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। বাজারের ব্যবসায়ী আব্দুল জব্বার ও আব্দুস সাত্তার এবং আরও অনেকে বলেন, আনোয়ার খানকে ঐ বাড়িতে আসা যাওয়া করতে কখনো দেখিনি। এ ব্যাপারে আনোয়ার হোসেন খান বলেন, আমি বর্তমান সরকার দলের ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক এবং আগামী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী। এলাকায় কিছু লোক সন্ত্রাসী চাঁদাবাজির মত কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে। আমি তাদের বাধা দেওয়ার কারনে এলাকায় আমার কিছু শত্রু তৈরী হয়েছে যারা আমাকে এই মামলায় জড়ানোর পরিকল্পনা করছে। আমি পুলিশের কাছে প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করে জড়িতদের গ্রেফতার করার দাবি জানাচ্ছি। মামলার তদনত্মকারী কর্মকর্তা এসআই শাখাওয়াত হোসেন জানান, আসামীদের ধরতে পুলিশ তৎপর রয়েছে।

সর্বশেষ আপডেটঃ ১০:০০ অপরাহ্ণ | আগস্ট ০৫, ২০১৫