| বিকাল ৫:০৫ - শনিবার - ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ - ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - ১০ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

কিশোরগঞ্জে জমে ওঠেছে ঈদবাজার ‘কিরণমালা’য় বুঁদ কিশোরী-তরুণী

সিম্মী আহাম্মেদ, কিশোরগঞ্জ ●৫ জুলাই ২০১৫, রবিবার
ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে ততই জমে ওঠছে কিশোরগঞ্জের ঈদবাজার। জেলার মার্কেট, বিপণিবিতান, শো-রম্নমগুলোতে এখন ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যনত্ম চলছে বেচাকেনা। শহরের ঈশাখাঁ রোডের আনোয়ারা সুপার মার্কেট, ভূঞা সুপার মার্কেট, ঈশাখাঁ শপিং কমপেস্নক্স, মাধবী পস্নাজা, চৌধুরী পস্নাজা ও নিরালা টাওয়ারে রয়েছে কাপড়ের নামিদামি দোকান। এসব দোকানে উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারের লোকজনের ভিড় বেশি। কিছুটা নিম্ন আয়ের লোকজন ভীড় করছেন শহরের তেরিপট্টি’র দোকানগুলোতে। এছাড়া বড়বাজারেও রয়েছে বেশ কয়েকটি শাড়ী-লুঙ্গির দোকান। এসব মার্কেট ও বিপণিবিতান ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি দোকানেই ক্রেতাদের চাহিদার কথা চিনত্মা করে সাজিয়ে রাখা হয়েছে বিভিন্ন নামের বাহারি সব পোশাক। বিক্রেতাদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, পহেলা রমজান থেকেই বিক্রি-বাট্টা শুরম্ন হয়েছে। তবে ১৫ রোজার পর থেকে বেচাকেনা বেড়েছে। এর মধ্যে ছোট ছেলেদের পাঞ্জাবি শার্ট, মেয়েদের টপস, ফ্রগ, লেহেংগা, কিশোরী-তরম্নণীদের থ্রিপিছ বিক্রি হচ্ছে বেশি। এসব পোশাকে জুড়ে দেয়া হয়েছে ভারতীয় সিরিয়ালের বিচিত্র সব নাম। মান যেমন তেমন এই নামের ওপরেই চলছে বেশির ভাগ পোশাক। ঈশাখাঁ রোডের চৌধুরী পস্নাজার আপন ক্রাফটে গিয়ে দেখা যায়, এক সারিতে বেশ কয়েকটি মেয়েদের পোশাক টাঙিয়ে রাখা হয়েছে। বিচিত্র সব নাম, ‘কিরণমালা’, ‘ইস্কেলিলা’, ‘বিন্দাস’, ‘কটকটি’, ‘বজ্রমালা’, ‘হটিসমালা’ ইত্যাদি। নিরাালা টাওয়ারের পাল ট্রেডার্সের নিকেশ পাল জানান, ‘মেয়েরা এসে এসব নামে পোশাক চায়। এ জন্য ট্যাগ লাগিয়ে দেয়া হয়েছে, যাতে কোনটা কী বলতে না হয়।’। ঈশাখাঁ শপিং কমপেস্নক্সের রূপকন্যা থ্রিপিছ ঘরের সুজিত দেবনাথ জানান, ‘ভারতীয় বিভিন্ন সিরিয়ালের নামের থ্রিপিছের কদর বেশি। যে কারণে তারা এসব নামের থ্রিপিছের মজুদও করেছেন প্রচুর।’
বিভিন্ন দোকান ঘুরে জানা গেছে এবারের ঈদের বাজারে বেশি চলছে ‘কিরণমালা’ নামের পোশাক। আগে ছিল ‘মাসাক্কালি’, ‘জিপসি’, ‘ঝিলিক’, ‘বাহা’। গতবার ছিল ‘পাখি’। এবার কিরণমালার ঝড়। আর এর সুযোগও ইচ্ছে মতো নিচ্ছেন বিক্রেতারা। কোনো পোশাকে পুঁতি বা পাথরের কাজ করা থাকলেই নাম দিয়ে দেয়া হচ্ছে ‘কিরণমালা’। এই নামের ওপরেই হুমড়ি খেয়ে পড়ছে কিশোরী-তরম্নণীরা। দামও রাখা হচ্ছে এক হাজারের টা তিন হাজার টাকা। নামের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে ভূঞা সুপার মার্কেটের অহম ফ্যাশনের ম্যানেজার বাদল রায় বলেন ‘মেয়েরা আইসাই বলে ‘কিরণমালা’ পোশাক দেখান। দেশি পোশাক দেখাইলে ওরা চলে যায়। এই কারণে দোকানে ‘কিরণমালা’ই বেশি আনছি।’ পোশাকে ভারতীয় নামে বিরক্ত তেরিপট্টির বিসমিলস্নাহ মার্কেটের শারমান ফ্যাশনের মালিক হুমায়ুন কবির স্বপন। তিনি বলেন, আজাইরা একটা নাম কিরণমালা। মেয়েদের মাথায় বুদ্ধিসুদ্ধি নাই কিনা বুঝি না। দেশিয় ভালো পোশাক দেখাইলে ওরা নেয় না। একটা পোশাক দেখিয়ে বলবেন, এটা ‘কিরণমালা’ বা অন্য কোনো ভারতীয় নাম, দেখবেন এক হাজার টাকার জিনিস তিন হাজার টাকায় নিবো।’
করিমগঞ্জের মুক্তা ও মিতু নামের দুই তরম্নণী ‘কিরণমালা’ পোশাক কিনতে এসেছেন। কেন ‘কিরণমালা’ কিনবেন? জানতে চাইলে মুক্তা বললেন, ‘অন্য বান্ধবীরা কিনেছে, এ জন্য কিনতে চাই।’
‘কিরণমালা’ পোশাকটি আসলে কেমন? এ প্রশ্নের উত্তরে মুক্তা বলেন, ‘সেটি ঠিক বলতে পারব না, দোকানদারদের বললেই ওরা দেখায়’।
এদিকে বিভিন্ন শাড়ীর দোকানে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জামদানি, বেনারশি, রাজশাহী সিল্ক ও টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ীগুলো এবার বিক্রি হচ্ছে ভালো।

সর্বশেষ আপডেটঃ ৫:২৪ অপরাহ্ণ | জুলাই ০৫, ২০১৫