| সন্ধ্যা ৬:৪৭ - শুক্রবার - ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ - ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ - ১৮ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

১৬২টি ছিটমহলে ৬ জুলাই হতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে খানা জরিপ

অনলাইন ডেস্ক, ২৬ জুন ২০১৫, শুক্রবার,

 বাংলাদেশ ও ভারতের ভিতরে থাকা উভয় দেশের ১৬২টি ছিটমহলে আগামী ৬ জুলাই থেকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে খানা জরিপের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
ভারতের মেখলিগঞ্জ মহকুমায় বাংলাদেশ ও ভারতের জেলা প্রশাসক পর্যায়ে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ৬ ঘন্টাব্যাপী সফল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এই বৈঠকে ছিটমহলের বর্তমান অবস্থা ও আর্থ-সামাজিক অবস্থা জানতে এই জরিপ করার সিদ্ধান্ত হয়। এতে করে উভয় দেশের ছিটমহলের প্রকৃত চিত্র স্পষ্ট হবে, যা ৩১ জুলাইয়ের মধ্যরাতে ছিটমহল বিনিময় চুক্তি কার্যকর করতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ও ভারতের ভিতরে থাকা ১৬২টি ছিটমহলের প্রকৃত অবস্থা জানতে ৬ জুলাই থেকে দুই দেশের প্রশাসনিক পর্যয়ে যৌথ ছিটমহল জরিপ কার্যক্রম শুরু হবে। এতে করে দুই দেশের ছিটমহলের আর্থ-সামাজিক অবস্থা ও জনসংখ্যাসহ প্রকৃত চিত্র স্পট হয়ে যাবে। ৩১ জুলাই মধ্যরাত থেকে দুই দেশের ছিটমহল বিনিময় ও হস্তান্তর কাজকে নির্ভুলভাবে করতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
দুই দেশের জেলা প্রশাসক পর্যায়ে অনুষ্ঠিত দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক এবিএম আজাদ। তার সাথে লালমনিরহাট জেলার জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান, নীলফামারীর জেলা প্রশাসক জাকির হোসেন, পঞ্চগড় জেলার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন, লালমনিরহাট ১২ বিজিবি অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল আহমদ বজলুর রহমান হায়াতী, বিজিবি রংপুর অঞ্চলের পরিচালক লেঃ কর্ণেল সাফিউল আলম, লালমনিরহাট পুলিশসুপার টিএম মুজাহিদুল ইসলাম, কুড়িগ্রাম পুলিশসুপার তবারক উল্ল্যাহ, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আক্তার হোসাইন আজাদ, ভুরুঙ্গামারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এজিএম এরশাদ আহসান হাবীব, পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূরকুতুবুল আলম, ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল করিম, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর পরিচালক জাহিদুল হক সরকার, ভারতের কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশ হাইকমিশনের কাউন্সিলর আনোয়ারুল ইসলাম, রংপুর জোনাল সেটেলমেন্ট কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান ও টেকনিক্যাল উপদেষ্টা ফাইজুর বারীসহ ১৬ সদস্যের প্রতিনিধি দল।
ভারতের পক্ষে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, কুচবিহার জেলা শাসক (ডিএম) মি পি উলাগানাথেন। তার সাথে ছিলেন, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিএসএফের ডিআইজি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সতান্তওয়াল ত্রিবেদি, কুচবিহার পুলিশসুপার রাজেশ কুমার ইয়াদেব, ভারতের অতিরিক্ত পরিসংখ্যান কর্মকর্তা এসকে চক্রবর্তী, বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের সহকারী হাইকমিশনার সন্দিব মিত্র, কলকাতা সহকারি ব্রাঞ্চ সেক্রেটারিয়েটের রঞ্জন মন্ডল, আন্ডার সেক্রেটারি (বিএম-৩) বিকাশ শ্রীবাস্তব, পশ্চিমবঙ্গের সেক্রেটারি (স্বরাষ্ট্র) অরুণ সেন, কুচবিহার অতিরিক্ত জেলা শাসক (সার্বিক) চিরঞ্জীব ঘোষ, কুচবিহার অতিরিক্ত জেলা শাসক (এল এন্ড এলআর) সঞ্জয় কুমার দাস, মেখলিগঞ্জ সাব ডিভিশনাল অফিসার রঞ্জন কুমার ঝাঁ, মাথাভাঙ্গা সাব ডিভিশনাল রঞ্জন চক্রবর্তী, দিনহাটা সাবডিভিশনাল অফিসার কৃষ্ণভা ঘোষ, ভারতীয় জরিপ অধিদফতরের উপ-পরিচালক (সার্ভে) উল্লাস চক্রবর্তী, ছিটমহল উন্নয়ন কর্মকর্তা প্রদীপ্ত ভেক্তা, কুচবিহার ৩৫ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের কমানন্ডেট লে. কর্ণেল অমিত লাল তিরকী ও জলপাইগুড়ি ২২ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের কমানন্ডেট লে. কর্ণেল অজয় লুথারা।
বৃহস্পতিবার কুচবিহার জেলার মেখলিগঞ্জ মহকুমার চ্যাংরাবান্ধা স্থলবন্দর বিএসএফ ক্যাম্পে দুই দেশের জেলা প্রশাসক পর্যায়ে এই যৌথবৈঠক হয়। ফলপ্রসু এই বৈঠক শেষে সন্ধ্যা ৬টা ৪২ মিনিটে বাংলাদেশি প্রতিনিধি দলটি জেলার পাটগ্রাম উপজেলায় ফিরে আসে।
কুড়িগ্রাম জেলার জেলা প্রশাসক এবিএম আজাদ জানান, ৩১ জুলাই মধ্যরাত থেকে দুই দেশের ভিতরে থাকা ছিটমহলগুলো চুড়ান্তভাবে দুই দেশের মধ্যে হস্তান্তর হবে। তাই ছিটমহলগুলোর প্রকৃত তথ্য, আর্থসামাজিক অবস্থান, জনসংখ্যাসহ বাড়ি বাড়ি গিয়ে খানা জরিপ করা হবে। এই জরিপ কাজ ৬ জুলাই থেকে ১৬ জুলাই পর্যন্ত ১০ দিন চলবে। জরিপ কাজ নির্বিঘ্নে করতে সুপারভাইজার মনোয়ন নিয়ে দুই দেশের জেলা প্রশাসকদের সাথে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় বাংলাদেশের ৭৫ জন গণনাকারী ও ভারতের ৭৫ জন গণনাকারী ছিটমহল যৌথ জরিপের কাজ করবে।
এই জরিপ কাজ শুরুর আগে পুনরায় ২ জুলাই বাংলাদেশের পাটগ্রামে উভয় দেশের জেলা প্রশাসক পর্যায়ে বৈঠক হবে। সেই বৈঠকে জরিপ কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা, কর্মচারী ও টেকনিক্যাল র্পাসনদের নামের তালিকা উভয় দেশের প্রশাসনের নিকট হস্তান্তর করা হবে। ছিটমহলের বাড়িবাড়ি গিয়ে খানা জরিপ কাজ হবে। জরিপ কাজে অংশ নেয়া প্রতিটি দলে ৫ জন গণনাকারী থাকবে। এই ৫ জনকে মনিটরিং এর জন্য একজন সুপারভাইজিং করবে।
উল্লেখ্য, ২০১১ সালের ১১সেপ্টেম্বর ছিটমহল বিনিময় কল্পে উভয় দেশের প্রশাসনের মাধ্যমে ছিটমহলে যৌথ জরিপ কাজ পরিচালিত হয়। বাংলাদেশের ভিতরে ভারতের ১১১টি ছিটমহল রয়েছে। ভারতের ভিতরে বাংলাদেশের ৫১টি ছিটমহল রয়েছে। (বাসস) :

সর্বশেষ আপডেটঃ ১০:৫৪ অপরাহ্ণ | জুন ২৬, ২০১৫