| রাত ৩:০৮ - শুক্রবার - ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ - ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - ১৬ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সিরাজগঞ্জে যুবদল নেতা খুন, স্ত্রী ও শ্যালক কারাগারে

অনলাইন ডেস্ক, ০৩ জুন, বুধবার,

 সিরাজগঞ্জ পৌর যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিম রেজা সুজনকে (৩৫) ঘুমন্ত অবস্থায় খুনের ঘটনায় আটক স্ত্রী উম্মে সালমা তিথি (২৮) ও শ্যালক পিয়াসকে (২৫) পুলিশ বুধবার জেলহাজতে প্রেরণ করেছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ ঘটনার রাতেই তাদের আটক করে। এ ঘটনায় নিহত সুজনের মা মাজেদা বেগম ঘটনার পরের দিন মঙ্গলবার বিকালে বাদী হয়ে সুজনের স্ত্রী ও শ্যালকসহ অজ্ঞাতনামা আসামি করে থানায় মামলা করেন। এর আগে সোমবার সন্ধ্যার পর নিজ ঘরের শয়ন কক্ষে শহরের মিরপুর উত্তর হাজীপাড়ার আব্দুল সামাদের ছেলে সুজনকে গলাকাটা কেটে হত্যা করা হয়। সুজনের ময়নাতদন্ত শেষে মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশ পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করে। বাদ আসর স্থানীয় মালসাপাড়া স্কুল মাঠে জানাযা শেষে স্থানীয় কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
সুজনের স্বজনরা জানায়, নিজ স্বামীকে ত্যাগ করে প্রেমের সর্ম্পকের কারনে ১৯৯৫ সালে পাশ্ববর্তী বিরালা কুঠি মহল্লার গোলাম রহমান পারভেজের মেয়ে উম্মে সালমা তিথি প্রেমিক সুজনকে বিয়ে করে। কিছুদিন পর তাদের মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। এরপর ২০০১ সালে আবারও তারা বিয়ে করেন। তাদের সংসারে জুবেদা ইসলাম সুতি নামে ৮ বছরের একটি মেয়ে রয়েছে। সুতি স্থানীয় স্কুলে ৩য় শ্রেণিতে পড়ে। কয়েক বছর যাবৎ রাজনৈতিক মামলার কারনে সুজন রাতে বাড়িতে থাকতো না এবং নেশায় আসক্ত হয়ে পড়েছিল। এ অবস্থায় স্ত্রী তিথি অন্যের সঙ্গে অবৈধ মেলামেশা শুরু করে এবং পরপর ৩ বার সুজনকে ছেড়ে বাড়ি থেকে চলে যায়। সুজন তার স্ত্রীকে ফিরে এনে পুনরায় সংসার শুরু করে। এসকল বিষয় নিয়ে সম্প্রতি স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো। এ অবস্থায় সোমবার সন্ধ্যার পর নিজ ঘরের শয়ন কক্ষে সুজনকে গলাকেটে হত্যা করা হয়। সুজনের পরিবারের দাবী জুসের সঙ্গে ঘুমের ঔষধ খাইয়ে ঘুম পারিয়ে রেখে তিথি পরিকল্পিতভাবে সুজনকে হত্যা করেছে।

ঘটনার পর সুজনের স্ত্রী তিথি পুলিশের সামনে সাংবাদিকদের বলেন, সোমবার সন্ধ্যা ৭টার পর আমার মোবাইলে কে বা কারা সুজনকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। হুমকি পেয়ে আমি ঘরের মধ্যে স্বামীকে ঘুমন্ত অবস্থায় রেখে ঘরের সামনের দরজায় তালা দিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে খোঁজ-খবর করি। সাড়ে ৭টার দিকে বাড়ি ফিরে এসে দেখি আমার স্বামীকে কে বা কারা গুরুতর জখম করে ঘরের পেছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে গেছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে নেয়ার পথে সুজন মারা যায়। ঘটনার সময় মেয়ে সুতিও বাড়িতে ছিল না।

সদর থানার ওসি হাবিবুল ইসলাম জানান, কে বা কারা ঘরের পিছনের দরজা দিয়ে সুজনের ঘরের শয়ন কক্ষে ঢুকে ঘুমন্ত অবস্থায় তাকে চাপাতি দিয়ে গলা কেটে আশংকাজনক অবস্থায় ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। তার স্ত্রী ও মেয়ে ওই সময় বাড়িতে ছিল না। বাড়ির লোকজন তাকে উদ্ধারের পর হাসপাতালে নেবার পথে সে মারা যায়। পরে স্বজনরা তার লাশ বাড়িতে নিয়ে যায়। রাতেই নিহতের লাশ ও হত্যাকা-ে ব্যবহৃত চাপাতি উদ্ধার এবং ঘটনাস্থল থেকে নিহত সুজনের স্ত্রী তিথি ও শ্যালক পিয়াসকে আটক করে থানায় নেয়া হয়। সুজন রাজনীতির পাশাপাশি ক্যাবল ব্যবসার সাথে জড়িত ছিল।

সর্বশেষ আপডেটঃ ৮:৩৫ অপরাহ্ণ | জুন ০৩, ২০১৫