ফলোআপঃ লোক লোকান্তরে খবর প্রকাশের পর ঘুষের টাকা ফেরত দিলেন অভিযুক্ত ৫ দারোগারা
মুক্তাগাছা(ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি: ২৭ মে ২০১৫, বুধবার:
ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় দৈনিক লোক লোকান্তর পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের একদিনপর বৃহস্পতিবার নারী নেত্রীদের উপস্থিতিতে ঘুষ হিসেবে নেয়া ৫০ হাজার টাকা ফেরতসহ ভিকটিমের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন অভিযুক্ত পাঁচ দারোগা। , দৈনিক লোক লোকান্তরসহ বিভিন্ন পত্রিকায় গত বুধবার “ মুক্তাগাছায় প্রবাসী দম্পতির বাড়িতে গভীর রাতে পুলিশের হানা’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। বৃহস্পতিবার ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু-আল- মাসুদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও ঘটনার তদন্ত করেন। পরে বিকালে মুক্তাগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ কামাল হোসেন স্থানীয় মহিলা পরিষদের নেত্রী রুমি দাস, মলিনা রানী দত্তসহ নারী নেত্রীদের নিয়ে ভিকটিমের বাসায় গিয়ে সংক্ষিপ্ত সালিশের মাধ্যমে দারোগা কর্তৃক ঘুষ হিসেবে নেয়া ৫০ হাজার টাকা ভিকটিমকে ফেরত দিয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনার মাধ্যমে বিষয়টির সমাধান করেন। এঘটনায় এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়। উল্লেখ গত রোববার রাত ১২টায় মুক্তাগাছা শহরের লক্ষ্মীখোলা এলাকার পৌর কবরস্থান গেইট সংলগ্ন দুবাই প্রবাসী শরাফত আলীর বাসায় মুক্তাগাছা থানার এসআই জাহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে এএসআই জিয়াউর রহমান, রেজাউল ইসলাম, ঈমান আলী ও আইনুল ইসলাম হানা দেয়। পুলিশ ওই ঘরে ঢুকেই দরজা-জানালা বন্ধ করে দেয়। এর পর ঘরে থাকা দেবরের নামে প্রবাসীর স্ত্রীর বিরুদ্ধে পরকীয়ার অভিযোগ করেন । প্রবাসীর স্ত্রী পুলিশের কাছে পরকীয়ার কথা অস্বীকার করেন। এর পরও তার কাছে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন পুলিশ সদস্যরা। টাকা দিতে অস্বীকার করায় আলমারির চাবি ছিনিয়ে নিয়ে তছনছ করা হয় ঘরের আসবাবপত্র। এ সময় জোর করে দেবরের সাথে ওই প্রবাসীর স্ত্রীকে বসিয়ে ছবি তোলে হুমকি দিয়ে বলা হয় টাকা না দিলে ওই ছবি ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়া হবে। গালিগালাজ করা হয় অকথ্য ভাষায়। পুলিশের এ ধরণের আচরনে পা ধরে কান্নাকাটি করেন ওই প্রবাসীর স্ত্রী। গৃহবধূর করুন আকুতির পরও নাজেহাল করা হয় তাকে। এ সময় বাড়াটিয়া সেনা সদস্য মাহমুদুল হাসান এগিয়ে যান। এসআই জাহিদ তাকেও মারধর করেন। কোন উপায়ন- না দেখে নগদ ২০ হাজার টাকা তোলে দেন তাদের হাতে। বাকি টাকার জন্য তার দেবর শাহীনকে ধরে নিয়ে যায় থানায়। রাতভর শারীরিক নির্যাতন করা তাকে। পরে সোমবার দুপুরে ৩০ হাজার টাকায় থানা হাজত থেকে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তাকে বলে দেওয়া হয় বাকি টাকা না দিলে আবারও তাকে থানায় ধরে আনা হবে। এঘটনায় প্রবাসীর স্ত্রী স্থানীয় মহিলা পরিষদ ও সাংবাদিকদের বিষয়টি অবহিত করে বিচার দাবী করেন। এ নিয়ে দৈনিক লোকলোকান্তরসহ কয়েকটি পত্রিকায় খবর প্রকাশ ও নারী নেত্রীদের সোচ্চার হওয়ার প্রেক্ষিতে পুলিশ উপরোক্ত সালিশের ব্যবস্থা করেন।