ঢাকায় নির্যাতিত গৃহকর্মী নেত্রকোনায়
নেত্রকোনা প্রতিনিধি : মানুষ কতটা নির্দয় হলে ছোট্ট শিশুকে গরম কুনি-র ছ্যাকা দিতে পারে তা না দেখলে বুঝার উপায় নেই। নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে মহিলা ওয়ার্ডের বেডেতে শুয়ে নির্যাতন যন্ত্রনায় কতরাচ্ছে কল্পনা আক্তার নামে ১২-১৩ বছর বয়সি শিশু গৃহকর্মী। সে পার্শ্ববর্তী ময়মনসিংহের গৌরীপুরের মাওয়া বড়ইকান্দি গ্রামের আবদুস সালামের মেয়ে। গৃহকর্তৃ তার হাত ভেঙ্গে দিয়েছে, মাথায় গরম লোহার ছ্যাকা এবং শরীরের বিভিন্ন স’ানে আঘাত করেছে।
জানা গেছে, গৌরীপুরের মাওয়া বড়ইকান্দি গ্রামের আবদুস সালামের ৫মেয়ে ও এক ছেলে। কল্পনা আক্তার তার তৃতীয় সন-ান। গরীব বাবার সংসারে একটু সাচ্ছন্দ আনার জন্য প্রায় চার বছর আগে একই গ্রামের আরশাদ আলীর কথায় কল্পনার বাবা- মা ঢাকায় এক বাসায় কাজে দেন। ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় জনৈক ফেরদৌসের বাসয় কল্পনা কাজ করত। কাজে যোগদানের পর থেকেই গৃহকর্তৃ রুনা আক্তার তাকে নানাভাবে নির্যাতন করত এবং বাড়িতে যেতে দিত না। সমপ্রতি কল্পনার মা রেজিয়া খাতুন মেয়েকে দেখতে ফেরদৌসের বাসায় যান এবং মেয়েকে বাড়ি নেয়ার কথা বলেন। এতে রুনা ক্ষিপ্ত হয়ে কল্পনার ওপর নির্যাতনের মাত্র বাড়িয়ে দেয়। মা ফেরার পরপরই তার হাত ভেঙ্গে ফেলে। কল্পনাকে চিকিৎসা না দিয়ে বাসায় আটকে রেখে তার মাথার থালুতে ছ্যানা গরম করে ছ্যাকা এবং শারীরীক নির্যাতন করে ওই গৃহকর্তৃ। এক পর্যায়ে আরশাদ আলীকে দিয়ে কল্পনাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেয় ফেরদৌস। গত শনিবার কল্পনার চাচা মানিক মিয়া তাকে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।
নির্যাতিত কল্পনা আক্তার হাসপাতালের বেডে অসহ্য যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছে। সে ভাল করে কিছু বলতে পারেনা। মঙ্গলবার হাসপতালে সাংবাদিকদের জানায়, কাজ একটু কম করলেই তাকে মারপিট করা হত। তাকে ঠিকমত খাবারও দিত না।
নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. মোস-াফিজুর রহমান জানান, শিশুটির ওপর অমানুষিক নির্যাতন করা হয়েছে। তাকে সারিয়ে তুলতে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে- সুস’্য হতে কিছুটা সময় লাগবে।